আন্দোলনের মুখে সারা দেশে বিআরটিসি’র বাসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১লা ডিসেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়ায় বিআরটিসি বাসে যাতায়াত করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সরকার, জনঘনিষ্ঠ এবং যৌক্তিক কোনো দাবিতে তিনি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাসে অর্ধেক ভাড়া দিতে হলে ছাত্র-ছাত্রীদের অবশ্যই নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছবিযুক্ত বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি বাসে চলাচলে এ সুবিধা পাবে।
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির দিনে এ কনসেশন প্রযোজ্য হবে না। শিগগিরই এ বিষয়ে বিআরটিসি প্রজ্ঞাপন জারি করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বেসরকারি মালিকানাধীন বাস-মিনিবাসেও শিক্ষার্থীদের কনসেশন দেয়ার বিষয়টি নিয়ে শনিবার বিআরটিএতে বৈঠক হবে। পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা সেখানে থাকবেন। আশা করি সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংবেদনশীল থেকে পরিবহন মালিকরা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক বাস ভাড়া কার্যকরে সরকারকে ৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ে মালিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সড়ক সচিব দেখা করতে গেলে এ আল্টিমেটাম দেয়া হয়। বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া হবে পাঁচ টাকা। সাধারণ যাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা। সাধারণ যাত্রীদের জন্য কিলোমিটারে ভাড়া দুই টাকা ১৫ পয়সা। ছাত্রদের জন্য কিলোমিটারে ভাড়া হবে দেড় টাকা। সাধারণ যাত্রীর ভাড়া ৫০ টাকা হলে, বিআরটিসির বাস শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেবে ৩৫ টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত কতটা কমবে- তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। প্রসঙ্গত, ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধিতে ভাড়া ২৭ শতাংশ বেড়েছে গত ৮ই নভেম্বর। বাড়তি ভাড়ার চাপে পড়া শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে হাফপাসের দাবিতে আন্দোলন করছে। প্রায় প্রতিদিনই তারা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করছে। এতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে আবার ভাড়া নিয়ে বাস চালক-শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের বিতণ্ডা লেগেই রয়েছে।