২৭শে নভেম্বর ২০০৯ সালের এই দিনে লালমোহনের নাজিরপুর লঞ্চঘাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদীতে ডুবে যায় এমভি কোকো-৪ লঞ্চ। এতে প্রাণ হারান ৮২ লঞ্চযাত্রী। যা ভোলার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ শোকাবহ ঘটনা। দুর্ঘটনার পর থেকে এক এক করে পেরিয়ে গেছে ১২ বছর। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় স্বজনহারা মানুষের কান্না আজও থামেনি। তবে দুর্ঘটনার পর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বিচার পায়নি ক্ষতিগ্রস্তরা। সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে সহায়তা দেয়া হলেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কারও খোঁজ-খবর নেয়নি। কোকো-৪ লঞ্চ দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন পিতা-মাতা, কেউ হারিয়েছে সন্তান, আবার কেউ বা ভাই-বোন আর পরিবারের উপর্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলেও আজও ধারন ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে চলছে অধিকাংশ লঞ্চ। কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজনহারা লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে নূরে আলম সাগর, তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইয়াসমিন, শ্যালিকা হ্যাপি বেগমকে হারিয়েছেন। নববধূর ওই লাশের কথা মনে করতেই আজও আঁতকে উঠেন ওই পরিবারের সদস্যরা। লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনায় ২০০৯ সালের ৩০শে নভেম্বর লালমোহন থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১১ সালে পুলিশ ওই মামলার চার্জশিট দিয়েছে। মামলাটি এখনো বিচারধীন রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, তখন আমি এমপি না থাকলেও ওই দুর্ঘটনায় নিহত সবাইকে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে সহায়তা করেছি। সে দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। এ ছাড়াও ঢাকা-লালমোহন নৌ রুটে অত্যাধুনিক লঞ্চ চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও আধুনিক লঞ্চ চলবে এ রুটে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৭শে নভেম্বর ঢাকা থেকে ঈদে ঘরমুখো যাত্রী নিয়ে ভোলার লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। দিবাগত রাতে লালমোহনের নাজিরপুর ঘাটের কাছে এসে যাত্রী চাপে ডুবে যায় লঞ্চটি। কোকো ট্র্যাজেডিতে লালমোহনের ৪৫ জন, চরফ্যাশনের ৩২ জন, তজুমদ্দিনের ২ ও দৌলতখানের ৩ জনের প্রাণহানি ঘটে।