বাংলারজমিন

বেতন-ভাতার দাবিতে খুমেক হাসপাতালে হরিজনদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

২০২১-১১-২৭

বেতনের দাবিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী হরিজনরা হাসপাতালের প্রায় সব ইউনিট ও পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে মানুষের মল ছিটিয়ে ধর্মঘট করেছেন। গত বৃহস্পতিবার  বিকাল থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘট শুরু করেন। এ সময় তারা মানুষের মল বালতি ভরে হাসপাতালে ছিটানো শুরু করেন। প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ কক্ষ, প্রধান ফটক, রোগী ভর্তি করার অফিস, রোগীদের থাকার ওয়ার্ড ও পরিচালকের কক্ষের সামনে মল ছিটান তারা। সেই মল ঝাড়ু দিয়ে ছড়িয়ে দেন। পরে বিকাল ৫টার দিকে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এ সময় হাসপাতালে মলের দুর্গন্ধে রোগী ও স্বজনরা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। পরে হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত হরিজনদের দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।
খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র করোনাকালীন পরিস্থিতি সামাল দেয়ার লক্ষ্যে এবং রোগীদের ভোগান্তি রোধে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সংকটের কথা চিন্তা করে ওই সময় ৫৬ জনকে কাজে নেয়া হয়। এর মধ্যে হরিজন ছিল ৪৫ জন। এই ৫৬ জনের প্রত্যেককে বেতন প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা করে দিতো। হাসপাতালে আউটসোর্সিয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের মূল বেতনের থেকে ২৬১০ টাকা কর্তন করে তাদের ওই বেতন দেয়া হতো। হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ আউটসোর্সিং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম ৬ মাস তারা বেতন পায়। খুমেক হাসপাতালে নিয়োগপ্রাপ্ত আউটসোর্সিং কর্মচারীরা জানান, আমাদের কষ্টের বেতনের টাকা কর্তন করার কারও অধিকার নেই। এটা নিয়মবহির্ভূত। আমরা করোনাকালীন সময়ে রোগীদের কথা চিন্তা করে বিষয়টি তখন মেনেও নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের বেতনের টাকা কর্তন করতে দেবো না। হরিজনরা জানান, গত পাঁচ মাস ধরে হাসপাতাল থেকে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা না দেয়ার কারণে তারা এ ধর্মঘট শুরু করেছেন।
ধর্মঘটকারীরা জানান, হাসপাতালে বর্তমানে হরিজন সম্প্রদায়ের বাইরেও ৩ শতাধিক আউটসোর্সিং কর্মচারী আছেন। তাদের বেতনের একটি অংশ কেটে রেখে হরিজনদের বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
আন্দোলনকারী বিধান হরিজন বলেন, পাঁচমাস ধরে আমরা শুধু কাজই করে যাচ্ছি। আমাদের কোনো বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ শুধু আশ্বাস দিয়েই আমাদের কাজ করাচ্ছেন। অবশেষে আমরা ধর্মঘট করতে বাধ্য হয়েছি।
তবে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রবিউল হাসান বলেন, ঠিকাদারের মাধ্যমে ওইসব হরিজরা টাকা পেতো। তবে তারা ঠিকাদারের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী না। আমি এখানে যোগদানের আগে ঠিকাদারের সঙ্গে সমন্বয় করে ঠিকাদারের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের বেতনের একটি অংশ কর্তন করে তাদেরকে দেয়া হতো। দুপুরে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় হরিজনরা মল ছিটিয়ে যে ঘটনা ঘটিয়েছে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য হরিজনদের সঙ্গে শনিবার আমরা বসবো।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status