২৪ বছর বয়সী এক তরুণ। চাকরি পেতে এক অভিনব উপায় অবলম্বন করলেন তিনি। লন্ডনের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র ক্যানারি হোয়ার্ফের টিউব স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে পড়েন মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র পাক বংশোদ্ভূত হায়দার মালিক। সঙ্গে রাখেন একটি প্ল্যাকার্ড। তাতে সাঁটা তাঁর বায়ো-ডাটার কিউআর কোড। হায়দার মালিক করোনভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজছিলেন, কিন্তু মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাংকিং এবং ফিন্যান্সে প্রথম-শ্রেণির ডিগ্রিধারী হওয়া সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটিও চাকরি পাচ্ছিলেন না ।তরুণ স্নাতক শেষ পর্যন্ত ব্যাংকিং এবং ফিন্যান্সে চাকরি খোঁজার আশায় ক্যানারি হোয়ার্ফের দিকে রওনা দেন। ২ নভেম্বর, তিনি একটি স্টেশনারি দোকান থেকে একটি বোর্ড কেনা , তার সমস্ত সিভি বোর্ডে আটকে স্টেশন চত্বরে নিয়ে যান। মালিক ওই বোর্ডেই QR কোড দিয়ে রেখেছিলেন যাতে সেগুলি দেখে লোকেরা তার লিঙ্কডইন প্রোফাইল এবং তার সিভি অ্যাক্সেস করতে পারে।
প্রথম প্রথম হায়দার বেশ নার্ভাস ছিলেন এবং ১০ মিনিট খালি হাতে দাঁড়িয়ে থাকার পর ভেবেই পাচ্ছিলেন না কি করবেন। তারপর তিনি পাশ দিয়ে যাওয়া লোকদের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন এবং খুব শিগগিরই লোকেরা তার সাথে আলাপ জমাতে লাগল।
অনেকে তাদের কার্ড এবং তাদের যোগাযোগের নম্বরও দিয়েছেন হায়দারকে।
এই সমস্ত ব্যক্তির মধ্যে, একজন ব্যক্তি তরুণ চাকরিপ্রার্থীকে একটি যুগান্তকারী সাফল্য দিয়েছেন। ইমানুয়েল নামে একজন ব্যক্তি হায়দারের কাছে আসেন এবং স্টেশনে তার সিভিগুলি রেখে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করার এই সাহসের জন্য অনেক প্রশংসা করেন । তিনি লিঙ্কডইনে ২৪ বছর বয়সী ওই তরুণকে একটি ছবি পোস্ট করার প্রস্তাব দেন, যা হায়দারের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে ওঠে। অভিনব পন্থা অবলম্বনে সুফলও মিলেছে হাতেনাতে। ১৪ দিনের মাথায় অচেনা ওই পথিকের সহযোগিতায় শেষমেশ ‘ট্রেজ়ারি অ্যানালিস্টের’ পদে যোগ দিয়েছেন তিনি। তাও আবার ক্যানারি হোয়ার্ফের অধীনেই। পরের টানা তিন দিনও একাধিক চাকরির প্রস্তাব নিয়ে ফোন বেজেছে তার। তবে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে ওই সংস্থাতেই ইন্টারভিউয়ের দ্বিতীয় ধাপ পেরিয়ে যান হায়দার। চাকরির চিঠি হাতে চলে আসে! চাকরি পেয়েই সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলেননি হায়দার। বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন ‘অচেনা’ ইমানুয়েলকে। হায়দার জানান, কিশোর বয়সে পাকিস্তান থেকে লন্ডনে এসেছিলেন তার বাবা মেহমুদ মালিক । ট্যাক্সি চালাতেন। তবে এখন অবসর নিয়েছেন। বাবার থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে অভিনব ভাবে জীবনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। চাকরির বাজার যে কতটা কঠিন করে তুলেছে অতিমারির প্রকোপ, তা হায়দারের মতো তরুণদের দেখলেই বোঝা যায়।
সূত্র: firstpost.com