× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হাসান সুনামিতে পুরনো গল্পে বাংলাদেশ

খেলা

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৮ নভেম্বর ২০২১, রবিবার

সেঞ্চুরি করে অপরাজিত লিটন দাস। অন্যপ্রান্তে মুশফিকুর রহীম ১৮ রান করলেই পেয়ে যাবেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে ২৫৩ রান। হাতে অক্ষত ৬টি উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে অদর্শ দ্বিতীয় দিনের শুরুটাতো একে সহজেই বলা যায়। মাঠে দর্শকরাও সকাল সকাল হাজির। এবার বুঝি পালে হাওয়া লাগবে বাংলাদেশের। কিন্তু ৭৭ রান যোগ করতেই বিদায় টাইগারদের ৬ জন ব্যাটার।
৩৩০ এ থামে বাংলাদেশের ইনিংস।  সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে থাকার আক্ষেপ নিয়ে বিদায় নিয়েছেন মুশফিক। তার আগে দ্বিতীয় দিন নিজের নামের পাশে মাত্র ১ রান যোগ করে আউট লিটন। বাকি চারজনের মধ্যে ৩৮ রান করে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন শুধু মেহেদী হাসান মিরাজ। অনেক আশা নিয়ে অভিজ্ঞ ইয়াসির আলী বিদায় নিয়েছেন মাত্র ৪ রান করে। সাগরিকা স্টেডিয়ামে যেন হাসান আলীর সুনামিতে ভেসে গেছে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। বল হাতে টাইগারদের গুঁড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খলনায়ক মুহূর্তেই বনে গেছেন নায়ক। হ্যাঁ, হাসান দেখিয়েছেন কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। আর বাংলাদেশ বন্দি হয়ে রইলো তাদের টেস্ট ক্রিকেটের পুরনো দিনের ব্যর্থতার গল্পে। যে গল্পে দারুণ খেলতে খেলতে খেই হারানোর হতাশা ছাড়া যে আর কোনোকিছুই নেই।  
সকালে নতুন বল, শীতের আগমনে উইকেট খানিকটা আর্দ্রতায় আছে। বলার অপেক্ষা রাখে না ব্যাটসম্যানদের জন্য দিনের শুরুটা চ্যালেঞ্জের। তাই বলে কোনো প্রতিরোধই গড়া যাবে না! টানা হারে আত্মবিশ্বাস হারানো দল। বিশ্বকাপে ব্যর্থ লিটন-মুশফিকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে দু’জনই খোলস ছেড়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু ধরে রাখতে পারেননি ধারাবাহিকতা। অথচ হাসান আলীর অবস্থাতো আরও খারাপই ছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই পেসারের ব্যর্থতায় ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ধুলায় লুটিয়ে ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু তার ওপর আস্থা হারায়নি দল। সেই প্রতিদান দেন টাইগারদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ অব দ্য সিরিজ হয়ে। টেস্টেও সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেই ছাড়লেন যে, খারাপ দিন একটা যেতেই পারে তাই বলে থেমেতো যাওয়া যায় না। এমনকি চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বিবর্ণ ছিলেন হাসানই। অথচ দুইদিকে সুইং আর দুর্দান্ত এই পেসার এক সেশনে নেন ৪ উইকেট। ইনিংস শেষ করেন ৫১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে। এ নিয়ে ১৬ টেস্টেই ৬ বার ৫ উইকেট শিকার তার।
দিনের শুরুতে পাকিস্তানের হয়ে বোলিং আক্রমণে আসেন স্পিনার নুমান আলী। তার সঙ্গে জুটি বাঁধেন হাসান। নিজের প্রথম ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন লিটনকে। লিটনের ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে প্যাডে। পাকিস্তান এলবিডব্লিউ পায় রিভিউ নিয়ে। লিটনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির ইনিংস থামে ২৩৩ বলে ১১৪ রান করে। এরপর দলের হাল ধরতে এসে অভিষিক্ত ইয়াসির আলী চৌধুরী প্রথম রানের দেখা পান ১৪ বল খেলে, শাহিন শাহ্‌ আফ্রিদির বলে দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভে চার মেরে। তবে তাকে সেখানেই থামান হাসান। তার ভেতরে ঢোকে বল ব্যাট-প্যাডের মধ্যে তৈরি হওয়া ফাঁক গলে বল উপড়ে দেয় স্টাম্প। এরপর ভরসা ছিলেন মুশফিক। আগের দিনের মতোই ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে ইনিংস গোছানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু ফাহিম আশরাফের অফ স্টাম্প ঘেঁষা ডেলিভারিতে তার লড়াই শেষ হয় ২২৫ বলে ৯১ রান করে। আউটটি নিয়ে অবশ্য খানিকটা সংশয়ের অবকাশ রয়ে যায়। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল যখন মুশফিকের ব্যাট পেরিয়ে যাচ্ছে, একইসঙ্গে তখন ব্যাট লাগে প্যাডেও। মাঠের আম্পায়ার আউট দেন, মুশফিক রিভিউ নিয়ে রক্ষা পাননি। বল  ব্যাট ছুঁয়েছে কিনা, সেটি নিশ্চিত হওয়া ছিল কঠিন।
এরপর রান যা বেড়েছে কেবল মিরাজের ব্যাটে। কিন্তু সঙ্গী হিসেবে সঙ্গে পাননি আর কাউকে। শুধু স্পিনার তাইজুল ১১ রান করে কিছুটা তাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেন। সেই তাইজুল ইসলামকে ফেরান আফ্রিদি। পরে আবু জায়েদ চৌধুরী ও ইবাদত হোসেনকে টানা দুই বলে ফিরিয়ে ইনিংস শেষ করে দেন পাকিস্তানের এই পেসার। সেইসঙ্গে পরের ইনিংস তিনি শুরু করবেন হ্যাটট্রিকের অপেক্ষায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর