× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

উল্টো চাপে বাংলাদেশ

শেষের পাতা

ইশতিয়াক পারভেজ, চট্টগ্রাম থেকে
২৮ নভেম্বর ২০২১, রবিবার

চট্টগ্রাম টেস্টে সকালের আলো মিলিয়ে গেল। যতই বেলা গড়িয়েছে শুধু বাংলাদেশকে গ্রাস করেছে গাঢ় অন্ধকার। আগের দিনের হাসি মুছে অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বলতে গেলে উল্টো চাপে বাংলাদেশ। অন্যদিকে বলতে পারেন টেস্টতো এমনই সেশনে সেশনে বদলায় রূপ-রং। তাই বলে গোটা একটা দিনই হতাশায় কাটবে বাংলাদেশের! মধ্যাহ্ন বিরতির মধ্যেই ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। এরপর পাকিস্তান যখন ব্যাট করতে নেমেছে তখন তো উইকেটের চরিত্র বদলে গেছে। দিনের বাকি সেশনগুলো তাদের দুই ওপেনারের দখলে।
৫৭ ওভারে বিনা উইকেটে ১৪৫ রানে। ১৮০ বলে ৯ চার ও দুই ছক্কায় ৯৩ রানে আছেন আবিদ আলী। ১৬২ বলে দু’টি করে ছক্কা ও চারে অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ৫২ রান। টাইগারদে হতাশা উপহার দিয়ে ৩৩০-এ আটকেছে। আর নিজেরাও ব্যাট হাতে শক্ত অবস্থানে, তৃতীয় দিন শুরু করবে ১৮৫ রানে পিছিয়ে থেকে। হাতে অক্ষত সব উইকেট। তবে কিছুটা হলেও চিত্র বদলের সুযোগ হাতে এসেছিল টাইগারদের। সফরকারী ব?্যাটসম?্যানদের ভুগিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। তার বলেই একবার এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন শফিক। কিন্তু সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেননি মুমিনুল হক। কিন্তু টিভি রিপ্লে দেখে আফসোসই করতে হয়েছে। এমন ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেখুন রিভিউ জিনিসটা পুরোপুরি তাৎক্ষণিক। মনে হয়েছে বলটা আগে ব্যাটে লেগেছে যে কারণে আমরা রিভিউ নিই নাই। যদি মনে হতো যে প্যাডে আগে লেগেছে তাহলে সন্দেহ নেই যে, আমরা রিভিউ নিয়ে নিতাম।’
বাংলাদেশ ভুল রিভিউ সিদ্ধান্ত নতুন কিছুই নয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও কম নয়। এরই মধ্যে ভক্তকূলের দাবি টাইগারদের আলাদা করে রিভিউ ক্লাস নিতে হবে। তাদের শেখাতে হবে কীভাবে আর কখন সেটি নিতে হয়! যাই হোক এমন ভুল সিদ্ধান্ত সারাদিনের ব্যর্থতার গল্পের ছোট একটি অংশ মাত্র। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তিব্র সামালোনার চাপে একাদশে অভিষেক হয়েছিল ইয়াসির আলীর। কিন্তু মাত্র ৪ রানেই আউট তিনি। হ্যাঁ, বলতে পারেন দারুণ একটি বলে তিনি আউট হয়েছেন। কিন্তু পরোক্ষণেই প্রশ্ন উঠতে পারে পাকিস্তানের অভিষিক্ত শফিককে নিয়ে। শুরুতে একটু ভুগছিলেন। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কেটে গেছে চাপ। টাইগার অধিনায়ক মুমিনুলকে ছক্কা মেরে ১৫৩ বলে হাঁকিয়েছেন অভিষেকেই টেস্ট ফিফটি। বাংলাদেশের চার বোলারের মধ?্য শুধু তাইজুল ইসলামই একটু সমীহ করেছেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার। বাকিদের পাত্তাই দেননি। বলার অপেক্ষা রাখে না টেস্টে টাইগারদের হতশ্রী বোলিংয়ের চেহারাটাই বেরিয়ে এসেছে। তবে এমন কথা মেনে নিতে নারাজ লিটন দাস। জোর গলায় দ্বিমত প্রকাশ করে পাশে দাঁড়ান বোলারদের। তিনি বলেন, ‘আপনি কীভাবে পুওর বোলিং লাইন আপ বলতে পারেন? যে কয়টা বোলার খেলছে সবাইতো টেস্ট বোলার। ইবাদত, রাহী এরা দু’জনেই টেস্ট বোলার এবং অনেক উপকারও করেছে, সাহায্য করেছে, উইকেটও নিয়েছে। তাইজুল, মিরাজকে নিয়েতো সন্দেহই নেই। তো এখানে পুওর বোলিংয়ের তো কিছু নেই।’
অন্যদিকে চট্টগ্রামের টেস্টের দ্বিতীয় দিন অনেক সম্ভাবনা আর সুযোগ নিয়েই শুরু করেছিল টাইগাররা। ২৫৩ রান আর হাতে ৬ উইকেট অক্ষত। কিন্তু সেখান থেকে শেষ মাত্র ৩৩০ রানে। আগের দিন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১১৩ রানে অপরাজিত থাকা লিটন এদিন মাত্র ১ রান করে আউট হয়েছেন। মুশফিক সেঞ্চুরি আশা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। ৮২  রানের সঙ্গে মাত্র ৯ রান যোগ করে আউট হয়েছে। আর মাত্র ৯ রান হলেই তার সেঞ্চুরিটা হতো। সেই সঙ্গে দলের স্কোর বোর্ডটাও সচল রাখতে পারতেন হয়তো। তাই প্রশ্ন উঠেছে ধারাবাহিকতা নিয়ে। বিশেষ করে লিটন দাসের। জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা কঠিন প্রশ্ন যে ধারাবাহিকতা। সবাই চেষ্টা করেছে ধারাবাহিক হওয়ার জন্য। আমি কতটুকু দিতে পারবো, রেজাল্ট কতোটুকু হবে জানি না। কিন্তু আমি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবো। গত ছয়-সাত টেস্ট ধরে করে আসছি। একশ’ করেছি দেখে পরের দিন নামলে যে আবার একশ’ হবে তেমনটা না। টেস্ট ক্রিকেট অনেক টাফ ক্রিকেট। শূন্য থেকে শুরু করতে হয়, সব সময়ই চ্যালেঞ্জ। তো কঠিন এটা। আমি চেষ্টা করবো যেভাবে গত ছয়-সাত টেস্টে খেলেছি সেভাবে খেলার জন্য।’
অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা ব্যর্থ লিটন বাদ পড়েছিলেন দল থেকে। ধারণা করা হচ্ছি টেস্টেও হয়তো তাকে সুযোগ দেয়া হবে না। কিন্তু দল আস্থা রাখে। টেস্টের আগে তাকে বিশ্রাম দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। আর তাতেই লিটন নিজেকে সৌভাগ্য মান করছেন। কারণ সেটি না হলে তার এই সেঞ্চুরি পাওয়া হতো না। দল থেকে বাদ পড়া আর খানিকটা বিশ্রামই নাকি তাকে আবার  ফিরিয়েছে। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে যে জন্য আমাকে ব্রেক দিয়েছিল হয়তো সেটাই হয়েছে মেইন রেজাল্ট। হয়তো তারা ভেবেছিলেন আমি টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করি এজন্য টি-টোয়েন্টিতে ব্রেক দিয়েছিলেন। প্রথম সবকিছুর অনুভূতি তো সব সময় ভালো। কোনো ব্যাটসম্যান যদি সেঞ্চুরি করে তার থেকে বড় কিছু থাকে না পাওয়ার। গত দুই-তিনটা খেলায় আমি কাছাকাছি গিয়েছিলাম, জিম্বাবুয়ের গেমটাতেও কাছাকাছি গিয়েছিলাম। কিন্তু হয়নি এটা ক্রিকেটের অংশ। এখন সেঞ্চুরি করেছি ভালো লাগছে। কিন্তু এটা যদি আরেকটু বড় করতে পারতাম তাহলে হয়তো দলের জন্য ভালো হতো।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর