প্রভাব খাটিয়ে ভোট নেয়ার কিছু অভিযোগ ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩২ ইউনিয়নের ভোট। নির্বাচনে জালভোট প্রদানের অভিযোগে সাজা দেয়া হয়েছে ২ জনকে। গতকাল ভোটের শুরুতেই নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে ওপেন ভোট নেয়ার জন্য প্রিজাইডিং অফিসারকে হুমকি দেয়া হয়।
সকাল সোয়া ৮টার দিকে ইউনিয়নের হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আসেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সওদাগর। কেন্দ্রটিতে সকাল থেকেই ভোটারদের উডচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কেন্দ্রে এসেই চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে ওপেন ভোট নেয়ার জন্য কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আবুল খায়েরকে চাপ দেন মুজিবুর রহমান। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে হুমকি দেন মুজিবুর রহমান। এ নিয়ে কেন্দ্রে হট্টগোল হলে পুলিশ এসে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সওদাগরের মোবাইলে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আবুল খায়ের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসে ওপেন ভোট নেয়ার জন্য আমাকে চাপ দেন।
আমি রাজি না হয়ে গোপন কক্ষে ভোট দেয়ার কথা বললে তিনি বলেন আমি প্রিজাইডিংয়ের বাপ। পরে আমি কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের জানিয়েছি।’ এদিকে, সরাইল ও নবীনগরে জালভোট দেয়ার সময় আটক ২ যুবককে ৬ মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সরাইলে সাজাপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন (২৭) টিঘর গ্রামের হিরা মিয়ার ছেলে। সকালে পানিশ্বর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী লায়েছ মিয়ার তালা প্রতীকে জালভোট দিতে এসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়। আলাউদ্দিন ইদ্রিস মিয়া নামের এক ভোটারের ভোট দিতে আসে। পুলিশ জানায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাফফাত আরা সাঈদের সম্মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধৃত হয় সে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা-২০১০ এর ৭০(১)(গ) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা-২০১০ এর ৭০(২) ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে। এছাড়া ৬ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় তাকে। নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের মুক্তারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জালভোট দেয়ার সময় পারভেজ আহমেদ (২০) নামে আরেক যুবককে ৬ মাসের সাজা দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সে মুক্তারামপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। প্রবাসী পিতার ভোট দিতে বুথে প্রবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয় সে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেনের সম্মুখে অপরাধ সংগঠনকালে হাতেনাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে ঘটনাস্থলে পরিচালিত মোবাইল কোর্ট তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে।