লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর ইউপির উত্তর গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রামগঞ্জ পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী এক পুলিশ কর্মকর্তাকে জোর করে টাকা দিতে চাইলেন। কিন্তু টাকা নেয়নি পুলিশ কর্মকর্তা আলহাজ উদ্দিন। গতকাল ভোট চলাকালীন দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এদিকে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের উত্তর গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরছেন। এক পর্যায়ে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলহাজ উদ্দিনকে প্রকাশ্যে কিছু টাকা হাতে দিতে জোরাজুরি করছেন। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা মেয়রের কাছ থেকে সে টাকা কোনোভাবেই নিতে চাইলেন না। এ সময় কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরের অনেক লোক বিষয়টি দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখান।
মেয়র এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে পুলিশকে টাকা দেয়ার বিষয়টিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। চন্দ্রগঞ্জ থানার দত্তপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আলহাজ উদ্দিন বলেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণে পুলিশ কঠোর অবস্থানে ছিল। পুলিশ সুপারের কঠোর নির্দেশনা ছিল অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে যেন সাধারণ মানুষ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। সেটাই পুলিশ পালন করেছে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে কাজ করছি। মেয়র যেভাবে টাকা দিতে চাইলেন, সেটা কেন নিবো। কারও কাছ থেকে কোনো টাকাও নেইনি। কেন নিবো? আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করছি।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু তাহেরকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কোনো কথা বলতে চাইনি। তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি জানা নেই। জনপ্রতিনিধি ভোটকেন্দ্রে ঘুরতে পারেন না। এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ সময় রামগঞ্জ পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারীর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মতামত পাওয়া যায়নি। এদিকে পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হয়েছে। তবে কেন পুলিশ টাকা নিবে। প্রশ্নই ওঠে না। সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বরাদ্দ দেন। পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও র্যাবসহ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার আইনশৃংখলা বাহিনী নির্বাচনে নিয়োজিত ছিল। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেন তিনি।