× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তাইজুলের ‘লাকি সেভেন’

খেলা

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৯ নভেম্বর ২০২১, সোমবার

৩৩০ রান করেও উল্টো চাপে ছিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে কোনো উইকেট না হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ১৪৫ রান। তৃতীয় দিনে তাই ফুরফুরে মেজাজেই মাঠে নামেন দুই পাক ওপেনার। আবদুল্লাহ শফিক ৫২ আর আবিদ ৯৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। কিন্তু সাগরিকায় সফরকারীদের জন্য তৃতীয় দিনের সকালে বিভীষিকা হয়ে এলেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দলের মূল স্পিনার সাকিব আল হাসান ইনজুরিতে খেলতে পারছেন না। তাই তাইজুলের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। আর তাইজুল একাই তুলে নিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা ৭ উইকেট।
বাকি তিন উইকেটের দুটি পেসার ইবাদত হোসেন চৌধুরী আর একটি অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ভাগাভাগি করে নেন। আর পাকিস্তান থামে ২৮৬ রানে। এতে ৪৪ রানের লিড পায় দল। সাকিবের পর দেশের টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ উইকেট শিকারে দ্বিতীয় সেরাও এই স্পিনার। এর আগে ২০১৪ তে তাইজুর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংসে ৮ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ৯ম বারের মতো তার ঝুঁলিতে জমা পড়লো ৫ উইকেট। ক্যারিয়ারে আটবার এমন কৃতিত্ব রয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের।
আগের দিন মধ্যাহ্নবিরতির পর প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। কোনো উইকেট না হারিয়ে দুটি সেশন  শেষ করে রানের পাহাড় গড়ার আশায়। তবে সেই আশার গুড়েবালি দিয়েছেন তাইজুল। উইকেটে টার্ন  পেয়ে  ফ্লাইট আর বৈচিত্রের দারুণ  প্রদর্শনী দেখান ২৯ বছর বয়সী এ বাঁহাতি স্পিনার। পাকিস্তানের দুই ওপেনার ছাড়া আর কোনো ব্যাটার ৪০’র কোঠাও ছুতে পারেননি। আবিদ আলী আউট হন ১৩৩ রানে।  তাইজুল প্রথম ওভারেই এনে দেন জোড়া উইকেট। স্টাম্প সোজা বল কাট করার চেষ্টায় আউট হন অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিক। নিজের নামের পাশে এদিন তিনি যোগ করতে পারেননি একটি রানও। থামেন আগের দিনের করা ৫২ রানেই। তাইজুলের পরের বল কিছুটা টার্ন করে ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে প্যাডে লাগে দলের হাল ধরতে আসা আজহার  আলীর। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সাফল্য পায় টাইগার শিবির। এরপর আরেক প্রান্তে অধিনায়ক মুমিনুল হক আক্রমণে নিয়ে আসেন ইবাদতকে। আগের দিন তার বোলিংয়ে কোনো ধারের দেখা মেলেনি। কিন্তু তৃতীয় দিন বল হাতে ছিলেন নিয়ন্ত্রিত। দু’জনের পেস-স্পিন আক্রমণে  পাকিস্তান প্রথম ১০ ওভারে তুলতে পারে মাত্রই ১০ রান। ৯৩ রানে দিন শুরু করা আবিদকে সেঞ্চুরি পর্ণ করতে অপেক্ষা করতে হয় দশম ওভার পর্যন্ত। ২০৯ বলে তিনি পা রাখেন মাইলফলকে। ১৫ টেস্ট খেলে ৩৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সফরে দারুণভাবে ব্যর্থ পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। টি-টোয়েন্টির পর টেস্টেও তিনি দলকে টানতে ব্যর্থ। মেহেদী হাসান মিরাজ বোল্ড করে দেন তাকে, ৪৬ বল খেলে পাক অধিনায়ক সাজঘরে ফিরে যান ১০ রান করে। তাইজুলের দারুণ ফ্লাইট ও লিটনের দুর্দান্ত ক্যাচে এরপর ৮ রানে বিদায় নেন অপ্রথাগত স্টান্সের ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ আলম। একটু পরই আসে আবিদকে থামানোর সুযোগ। তবে তাইজুলের বলে ১১৩ রানে স্লিপে তার ক্যাচ নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। তারপরও ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ। এক প্রান্ত থেকে টানা ১৬ ওভার বল করে ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন তাইজুল। সেই ধারা বাংলাদেশ ধরে রাখে দ্বিতীয় সেশনেও। ভেতরে ঢোকা ১৪১ কিলোমিটার গতির ডেলিভারিতে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফেরান ইবাদত। একটু পরই আবিদকে ফিরিয়ে বড় বাধা সরান তাইজুল। ২৮২ বলের ইনিংসে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১৩৩ রানে থামেন পাকিস্তানের এই ওপেনার। হাসান আলীকে ফিরিয়ে তাইজুল পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।
এরপর ইবাদত যখন উড়িয়ে দিলেন সাজিদ খানের স্টাম্প, বেশ বড় লিডের হাতছানি তখন বাংলাদেশের সামনে। তবে শেষ জুটিতে ব্যবধান কিছুটা কমান ফাহিম আশরাফ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। দুজন উইকেটে কাটিয়ে দেন ১২ ওভার। শেষ পর্যন্ত ৩৮ রান করা ফাহিমকে ফিরিয়ে ইনিংস শেষ করেন সেই তাইজুলই। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বাধিক উইকেটশিকারি সাকিব আল হাসান। ৫৮ টেস্টে ২১৫ উইকেট তার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪০ উইকেট তাইজুলের। সবচেয়ে বেশি ৫ উইকেটের রেকর্ডও সাকিবের। ১৮ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন টাইগার অলরাউন্ডার।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর