× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে মুখোমুখি জাপা-বিএনপি

দেশ বিদেশ

সংসদ রিপোর্টার
২৯ নভেম্বর ২০২১, সোমবার

বিএনপিকে পাকিস্তান প্রেম ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। গতকাল সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে তিনি এই দাবি জানান। এদিকে অধিবেশনে পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু ও জাতীয় পার্টির মো. হারুনুর রশীদ। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাশেদ খান মেনন বলেন, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ গত শনিবার যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা কেবল অসত্যই নয়, তিনি তার বক্তব্যে চালাকির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৪ সালের জাতিসংঘের বক্তব্যকেও টেনে এনেছিলেন। গণমাধ্যমে এসেছে তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দল নিয়ে কথা বলায় সংসদে হইচই হয়েছে। বরং তিনি যেটা করতে চেয়েছিলেন, সেটা হচ্ছে পাকিস্তানের পতাকা উড়ানোর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা। এমন ঘটনা শুধু এখন নয়, বাংলাদেশ সৃষ্টির পরেও হয়েছিলো। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর সফর ঘিরেও পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটানো হয়েছিল।
এবার ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের পতাকা উড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। সরকারের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করার পরও বিএনপি’র পাকিস্তান প্রেম দেখতে হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে আমাদের গৌরব অধ্যায়কে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের এক হতে হবে। বিএনপিকে বলবো, এখনো সময় আছে, আপনাদের পাকিস্তান প্রেমটা দূরে রাখুন। খেলা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশে অন্য দেশের পতাকা উড়বে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানের পতাকা উড়ানোর ঘটনা পরিকল্পিত। দেশে বর্তমানে যে জঙ্গি উত্থান রয়েছে, তার সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দারা জড়িত রয়েছে কিনা আমরা জানি না। ক্রিকেট প্রেম এক জিনিস, জাতীয় প্রেম, গৌরব ও পতাকা আরেক জিনিস। খেলার মাঠে তাদের সমর্থন করতে পারি। কিন্তু তার জন্য তরুণরা পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে মাঠে যাবে, সেটা হতে পারে না। এটা পরিকল্পিত। পাকিস্তানের হাইকমিশনের অনুষ্ঠানে দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করে জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, পাকিস্তান হাইকমিশনে যে অনুষ্ঠান হয়, সেখানে আমাদের শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো স্পন্সর করে। তাদের সে কার্ডের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম আপনারা দেখতে পারেন। আমরা দেখেছিলাম যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিচারের সময় সাফাই গাওয়ার জন্য লোক দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। অনেক কষ্টে তা ঠেকানো গিয়েছিল। এগুলো তো ইতিহাস। এদিকে সংসদ অধিবেশনে ‘টেরিটোরি ওয়াটার অ্যান্ড মেরিটাইম জোন-২০২১’ বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি’র হারুনুর রশীদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলা হয়েছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, তারা বুঝবে না। কীভাবে পাকিস্তান হত্যা-নির্যাতন, নারী ধর্ষণ, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমরা তখন ভারতে যাই। ভারত যদি আমাদের প্রশিক্ষণ না দিতো, অস্ত্র না দিতো, কীভাবে আমরা যুদ্ধ করতাম? তাই ভারতের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। একাত্তরে পাকিস্তানের চেহারা তারা দেখিনি তাই তাদের এত পাকিস্তান প্রেম, তারা পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলে। তাই এই পাকিস্তান প্রেমে ঘৃণা হয়! এর আগে হারুনুর রশীদ বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। আপনি এটা কেন বলবেন, এটা ঠিক না। এটা প্রত্যাহার করেন। ভারতের সঙ্গে এত রক্তের সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক তাহলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হচ্ছে না কেন? সমুদ্রসীমা অর্জন নিয়ে আমরা বিজয় উৎসব করেছিলাম, তা নিয়ে ভারত জাতিসংঘে ইতিমধ্যে আপত্তি জানিয়েছে। মিয়ানমার মানছে না। যাদের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক তারা রোহিঙ্গা নিয়ে আমাদের পাশে নেই। ভারত আপনার পাশে নেই। জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর বক্তব্যের পর আবারো বক্তৃতা করেন হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, আমি ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্কের বক্তব্য নিয়ে কথা বলেছি। আমি পাকিস্তানের পক্ষে কোথায় কথা বললাম? প্রতিনিয়ত সীমান্ত হত্যা হচ্ছে। এভাবে যদি কথা বলা হয়, মানুষ বলবে ভারতের দালাল। ইয়াবাসহ মাদক আসছে ভারত থেকে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি আছে, এই বিষয়গুলো কী সমাধান হয়েছে? পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নেই। এসব কথা বললে কেন পাকিস্তানপ্রীতি বলা হবে? এরপর আরেকটি বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এত পাকি প্রেম কেন? আমি তো কারও নাম নেইনি। অথচ ওনার গায়ে লাগলো কেন?
এমপিরা ব্যাক্কলের মতো ঘোরে: এদিকে এমপিদের রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ঠিক করে দেয়ার দাবি জানিয়ে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেছেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও অস্ত্রধারী আনসার সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করেন। আর সংসদ সদস্যরা (এমপি) ‘ব্যাক্কলের মতো ঘোরে’। মুজিবুল হক বলেন, সংসদ সদস্যদের স্ট্যাটাসটা কি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল, এটা জানতে চেয়ে বলতে বলতে মইন উদ্দীন খান বাদল মরেই গেছেন। উচ্চ আদালত নিজেদের মতো করে ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স ঠিক করেছে। সেটা করতে পারে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, এরপর স্পিকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি একসমান। তিনি বলেন, ‘করুন, আপত্তি নাই। কিন্তু একজন পার্লামেন্টের মেম্বার জনপ্রতিনিধি, রাষ্ট্রের মালিক, তাদের প্রতিনিধি কোনো সরকারি আমলার নিচে থাকবে, এটা অসুন্দর লাগে।’ মুজিবুল হক বলেন, ‘কিছুদিন আগে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায় আক্রমণ হয়েছিল। সে আক্রমণের কারণে এখন সারা বাংলাদেশে সব ইউএনওর বাসায় ১০-১২ জন আর্মসধারী আনসার দেয়া হয়েছে। আবার সেই ইউএনও সাহেবের গাড়িতে কিন্তু তিন-চারজন আনসার উইথ আর্মস তারা সঙ্গে নিয়ে যান। আর আমার এমপি ব্যাক্কলের মতো ঘোরে। এমপি’র পার্সোনাল একটা গানও নাই। সংসদ নেতা শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে মুজিবুল হক বলেন, সময় চেঞ্জ হয়েছে। মাননীয় সংসদ নেত্রী, আপনার সঙ্গে তো অনেকে আছে, এমপিরা তো একলা একলা ঘোরে। ডিসির একজন বডিগার্ড আছে, সচিবের বডিগার্ড আছে, আর এমপি ঢাকা শহরে একা একা ঘোরে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর