× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হাইপ্রোফাইল যৌন কেলেঙ্কারির বিচার শুরু আজ

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(২ বছর আগে) নভেম্বর ২৯, ২০২১, সোমবার, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন

হাইপ্রোফাইল যৌন কেলেঙ্কারির মামলা। বৃটিশ কেতাদুরস্ত প্রভাবসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে এই মামলা। তিনি ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল (৫৯)। যৌনতায় পাচারের অভিযোগ এবং কম বয়সী মেয়েদের যৌনতায় উদ্বুদ্ধকরণসহ ইত্যকার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, তিনি কম বয়সী মেয়েদের সরবরাহ দিয়েছেন যৌনশিকারী কুখ্যাত জেফ্রে এপস্টেইনকে। ওইসব মেয়েকে পেয়ে যৌনতায় মেতে উঠতো এপস্টেইন।

এ অভিযোগে জেলে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালে জেলেই মারা যায় এপস্টেইন। সে চলে যায়।
কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত যারা তাদের নাম আস্তে আস্তে ভেসে উঠতে থাকে। তার মধ্যে রয়েছেন বড় বড় রথি-মহারথি। তার একজন ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। তিনি বৃটিশ মিডিয়া মুঘল বলে পরিচিত রবার্ট ম্যাক্সওয়েলের ছোট মেয়ে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করা ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে জেলে আটক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মেয়ে পাচার এবং অন্য অপরাধের বিচার আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটিতে। অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি চ্যালেঞ্জ জানাবেন বলে বলা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

গত বছর ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকেই তিনি জেলে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া চলবে ৬ সপ্তাহ। ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এবং ফ্রাঞ্চের নাগরিক। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। জেলে তার অবস্থা খুব খারাপ এমনটা বার বার অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যরা। এ অবস্থা থেকে তার জামিন চেয়ে তারা আবেদন করেছেন কয়েকবার। কিন্তু তাতে সফল হননি।

২০১৯ সালের ১০ই আগস্ট নিউ ইয়র্কের জেলে মারা যায় এপস্টেইন। তার বিরুদ্ধেও যৌনতায় পাচারের অভিযোগ ছিল। সেইসব অভিযোগ থেকে জামিন চেয়ে সেও পায়নি। এরপর বিচারের জন্য অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু তার আগেই সে মারা গেছে। আজ সোমবারের বিচারিক কার্যক্রমে প্রসিকিউশন থেকে অভিযোগ সামনে এনে তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে যেসব সাক্ষীকে সামনে আনা হচ্ছে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে বিবাদীপক্ষ। বিচার কার্যক্রমের সময় আদালতে কোনো ক্যামেরা অনুমোদন করা হবে না।
ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের আইনজীবীর একটি চিঠি অনুযায়ী, বিবাদী পক্ষ আদালতে দাবি করবে যেসব অভিযোগকারীকে সামনে আনা হয়েছে তাদের স্মৃতি বিভ্রাট ঘটেছে। এক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তা নিতে আহ্বান জানানো হতে পারে।


অভিযোগ কি!
কম বয়সী মেয়েদেরকে জেফ্রে এপস্টেইনের যৌনতার রাজ্যে সরবরাহ দেয়ার অভিযোগ আছে ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা বলেছেন, কম বয়সী মেয়েদের যৌনতায় উদ্বুদ্ধ করতে এবং তাদেরকে নির্যাতনের মুখে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। এক্ষেত্রে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে ঘটনার জন্য তার বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম তিনি জেফ্রে এপস্টেইনের খুব ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং এপস্টেইনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। অন্য দুটি অভিযোগ হলো- যৌনতায় পাচার ষড়যন্ত্র এবং কম বয়সী মেয়েদের যৌনতায় পাচার কাজে জড়িত। ২০০১ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে তিনি এসব অপরাধ করেছেন বলে বলা হয়েছে।

জেফ্রে এপস্টেইনের হাতে নির্যাতিতদের একজন সারা র‌্যানসম। তিনি বিবিসি প্যানোরামা প্রোগ্রামে বলেছেন, জেফ্রে এপস্টেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। সারা র‌্যানসমের অভিযোগ, ওইসব মেয়েকে নিয়ন্ত্রণ করতেন ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। তিনি ছিলেন ‘ম্যাডামের’ মতো। যৌনতায় পাচার কার্যক্রমের আদ্যোপান্ত ছিলেন তিনি।

আজ সোমবার এ মামলার যে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে সেদিকে নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন পর্যন্ত সবাই নজরে রাখবে। বৃটিশ প্রকাশনা মুঘলের এই উত্তরসূরী বছরের পর বছর মিডিয়ার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। কারণ, তার অভিযোগকারীরা হতাশাজনক এবং বিরক্তিকর সব অভিযোগ নিয়ে সামনে এগিয়ে এসেছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল মামলাগুলোর একটি, যেখানে যৌনতায় মেয়ে পাচারের দায়ে একজন নারীর বিচার হচ্ছে। ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে যে চারটি তখনকার কম বয়সী মেয়ে অভিযোগ করেছেন, তারা এখন পূর্ণ বয়স্কা নারী। ধারণা করা হচ্ছে, তারা শপথের অধীনে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেবেন আদালতে।

তবে ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলও একইভাবে নিজের কথা বলবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়। তার ভাই ইয়ান ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, বিচার চলাকালে ভাইবোনদের মধ্যে প্রতিদিন কমপক্ষে একজন তাকে সাপোর্ট করতে বিচারে উপস্থিত থাকবেন। আদালতের ভিতরে কোনো ক্যামেরা প্রবেশ করতে না দেয়ায় ভিতরে কি ঘটে সে সম্পর্কে জানা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। এক্ষেত্রে এপস্টেইনের যৌনতার রাজত্ব নিয়ে কি রকম আলোচনা হয় বা কি কি তথ্যপ্রমাণ সামনে আনা হবে, তাও পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না।

কে এই ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল!
১৯৬১ সালে বড়দিনে প্যারিসের বাইরে জন্মগ্রহণ করেন ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। সেখানেই বড় হন। যোগ দেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। জানেন বেশ কয়েকটি ভাষা। সেই ভাষায় কথাও বলতে পারেন। তিনি রবার্ট ম্যাক্সওয়েলের নবম এবং সবচেয়ে ছোট সন্তান। তার পিতা এখন প্রয়াত। পিতার সঙ্গে তার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এ জন্য পিতা রবার্ট ম্যাক্সওয়েল তার নামে একটি বিলাসবহুল প্রমোদতরীর নামকরণ করেছেন- লেডি ঘিসলেইন। ১৯৯১ সালে মারা যান তার পিতা। এরপরই বসতি স্থাপনে বৃটেন থেকে যুযক্তরাষ্ট্রের চলে যান ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। শুরু করেন রিয়েল এস্টেটের কাজ। এর অল্প সময়ের মধ্যেই তার সঙ্গে সাক্ষাত হয় জেফ্রে এপস্টেইনের। ২০১৬ সালে ম্যানহাটানের বাড়ি বিক্রি করে দেন ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল। তারপর নিজেকে লুকিয়ে রাখতে শুরু করেন। কিন্তু গত বছর জুলাই মাসে তাকে নিউ হ্যাম্পশায়ারের একটি ম্যানসন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর