× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ওমিক্রনে আক্রান্ত বুঝবেন কী করে? এই প্রথম ব্যাখ্যা দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডাক্তার

অনলাইন


(২ বছর আগে) নভেম্বর ২৯, ২০২১, সোমবার, ৩:৪৫ অপরাহ্ন

দক্ষিণ আফ্রিকার ডাক্তার যিনি প্রথম করোনার নতুন স্ট্রেইন ওমিক্রন নিয়ে আশংকা প্রকাশ করেছিলেন এবার তিনি প্রথম ব্যাখ্যা করলেন ওমিক্রনে আক্রান্ত হবার পর রোগীর দেহে কি কি উপসর্গ দেখা যায়। দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ড. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি রোববার বিবিসিকে বলেছেন যে তিনি ১৮ নভেম্বরের কাছাকাছি করোনা রোগীদের দেখতে শুরু করেছিলেন যারা "অস্বাভাবিক লক্ষণগুলি" নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ক্লিনিকে, এদের সঙ্গে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের বেশ কিছুটা পার্থক্য ছিল।

ডাক্তার কোয়েটজি জানান, গত ১০ দিনে ৩০ জন রোগীকে করোনা ভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন দ্বারা সংক্রমিত হতে দেখেছেন। ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিত রোগীর চরম ক্লান্তি, গলা ব্যথা, পেশী ব্যথা এবং শুকনো কাশির মতো সমস্যা রয়েছে। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে এর লক্ষণগুলো বেশ আলাদা। কোয়েটজি বলেন 'একজন ৩৩ বছর বয়সী পুরুষ রোগী এসেছিলেন চিকিৎসা করতে।

তিনি বলছিলেন গত কয়েকদিন ধরেই তিনি খুব ক্লান্ত এবং তার শরীরে ব্যথা অনুভব করছিলেন। সেই সঙ্গে মাথাব্যাথাও তাকে ভোগাচ্ছিল।
''সন্দেহ হওয়াতে এই রোগীকে কোভিড টেস্ট করার পরামর্শ দেন ডাক্তার কোয়েটজি, দেখা যায় ওই পুরুষ রোগীর রিপোর্ট পজিটিভ। দেরি না করে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যাকসিন উপদেষ্টা কমিটির সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি তাদের জানান কোয়েটজি।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সাথে এখনও পর্যন্ত যে যে রোগী দেখেছেন তাদের সবার দেহেই "অত্যন্ত হালকা" উপসর্গ দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোয়েটজি এবং তার সহকর্মীরাও অনুরূপ কেস লক্ষ্য করেছেন। ''ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের কেন্দ্রস্থল দক্ষিণ আফ্রিকায় বসেই আমরা ক্লিনিক্যালি যা দেখছি- তা করোনার অত্যন্ত মৃদু উপসর্গ বলে মনে হয়েছে। আমরা কাউকে হাসপাতালেও ভর্তি করিনি।'' জানাচ্ছেন ডাক্তার কোয়েটজি এবং তার সহকর্মীরা। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ডেল্টা আক্রান্তদের মতো ওমিক্রন আক্রান্তদের কেসে এখনও পর্যন্ত স্বাদ-গন্ধ হারিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটেনি। এমনকী করোনা আক্রান্তের কেসে এতদিন সবথেকে চিন্তার বিষয় ছিল রক্তে অক্সিজেন লেভেল হঠাৎ নেমে যাওয়া, এই নতুন রূপের ক্ষেত্রে তাও হয়নি।

গবেষণা চলছে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে করোনার নতুন রূপটি কীভাবে ডায়াগনস্টিকস, থেরাপিউটিকস এবং ভ্যাকসিনগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে তা বুঝতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। কোয়েটজির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণগুলি শুধুমাত্র খুব অল্প সংখ্যক ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে বর্ণনা করা হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা ওমিক্রনের বিপুল সংখ্যক মিউটেশন নিয়ে চিন্তিত। ডব্লিউএইচওর মতে, প্রাথমিক প্রমাণ থেকে বোঝা যায় যে স্ট্রেইনের পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের বিশ্লেষণ অনুসারে, প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা যায় যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি দক্ষিণ আফ্রিকায় আগের ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং যে বৈকল্পিকটি আনুষ্ঠানিকভাবে B.1.1.529 নামে পরিচিত, এটি সংক্রমণের একটি নতুন তরঙ্গ শুরু করতে পারে।

বৃহত্তর স্কেলে নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিশেষ লক্ষণগুলি বুঝতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনে ভাইরাসটি প্রথম আবির্ভূত হওয়ার পর থেকে কোভিডের লক্ষণগুলি বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। "আলফা" এবং "ডেল্টা" ভ্যারিয়েন্ট, প্রথম যুক্তরাজ্য এবং ভারতে আবিষ্কৃত হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই আলাদা উপসর্গ দেখা গেছে। প্রথম ২-১৪ দিন তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ রোগীর দেহে কি উপসর্গ পরিলক্ষিত হয় তা বিবেচনা করতে। সিডিসি তালিকাভুক্ত লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর বা ঠান্ডা লাগা, কাশি, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে অসুবিধা, পেশী বা শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, স্বাদ বা গন্ধের সমস্যা, গলা ব্যথা, সর্দি, বমি বমি ভাব বা বমি এবং ডায়রিয়া।

অহেতুক আতঙ্ক?
বেশ কয়েকটি দেশ এখন অস্থায়ীভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে যেখানে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে, শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এই পদক্ষেপের কড়া নিন্দা করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল এবং ইইউ-এর মতো দেশগুলি অযথা আতঙ্কে ভুগছে একথা মনে করিয়ে ডাক্তার কোয়েটজি জোর দিয়ে বলেছেন, ইতিমধ্যেই সেইসব দেশে নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। হয়তো আর ২ সপ্তাহ পর বিষয়টা জানা যাবে ।

WHO-এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস সোমবার সিএনবিসিকে বলেছেন যে "আমাদের ধন্যবাদ জানাতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নতুন ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য, যা ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইসরাইল, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইতালিতে পাওয়া গেছে। তবে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং হংকং, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনো এর অস্তিত্ব মেলেনি'। WHO-এর তরফে মার্গারেট হ্যারিস বলেছেন যে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি দেখতে তারাও পছন্দ করেন না তবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিকে তাদের নিজস্ব মহামারী সংক্রান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে নিজেদের মত করে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।

ইউএন হেলথ এজেন্সি সোমবার বলেছে যে, ডেল্টা রূপটি এখনও পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী বর্তমান সংক্রমণের বেশিরভাগের জন্য দায়ী । ডব্লিউএইচওর প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন সোমবার CNBC-এর “Squawk Box Asia”-কে বলেছেন, “বিশ্বজুড়ে ৯৯%-এরও বেশি আক্রান্তের ঘটনা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে এবং বেশি মৃত্যু ঘটছে টিকাবিহীন অবস্থায়। আমাদের ওমিক্রন সম্পর্কে আরও জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।''

সূত্র: সিএনবিসি
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর