কয়েকদিন আগেই ধর্ষণের অপরাধে সাজা খাটা এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ নির্দোষ ঘোষণা করেছে আমেরিকার আদালত। এবার সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন ‘দ্য লাভলি বোনস’-এর মতো বেস্ট সেলার উপন্যাসের রচয়িতা আমেরিকান লেখিকা অ্যালিস সেবোল্ড। যিনি ১৯৮১ সালে ধর্ষণের শিকার হন। ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ‘লাকি’ নামের এক বইয়ে তাঁর উপরে হওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছিলেন লেখিকা। পরে ‘দ্য লাভলি বোনস’ বইয়েও নিজের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
১৯৮১ সালে ১৮ বছর বয়সে নিউইয়র্কের সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় তিনি নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন। পরে পুলিশকে বলেছিলেন যে, তিনি রাস্তায় একজন কৃষ্ণাঙ্গ লোককে দেখেছেন যাকে তিনি তার আক্রমণকারী বলে বিশ্বাস করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অ্যান্থনি ব্রডওয়াটারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
সনাক্তকরণের সময়ে সেবোল্ড পুলিশ লাইন-আপে আসল অপরাধীকে সনাক্ত না করে ব্রডওয়াটারকে চিহ্নিত করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর জেল খাটেন নির্দোষ ওই ব্যক্তি।
১৯৯৮ সালে তিনি ছাড়া পান। কিন্তু কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও ব্রডওয়াটার যৌন অপরাধীদের রেজিস্টারে তালিকাভুক্ত হয়ে যান। কিছুদিন আগে মামলাটির পুনর্বিচার হলে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হন ব্রডওয়াটার। ২২ নভেম্বর তাঁকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। সেদিন চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি এই নির্দোষ মানুষটি। এবার তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলেন অ্যালিস। ব্রডওয়াটারের উদ্দেশে অ্যালিস বলেন, "আমি বলতে চাই, আমি সত্যিই দুঃখিত। এবং আপনাকে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সে কথা আমি গভীর অনুতপ্ত।"
অন্যায় ভাবে যে ব্রডওয়াটারের জীবন থেকে এতগুলি বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সেকথাও মেনে নেন অ্যালিস। বলেন, ''আমি জানি কোনও ক্ষমা প্রার্থনাই আপনার জীবনকে আর বদলে দিতে পারবে না।" সেই সঙ্গে আক্ষেপের সুরে লেখিকা বলেন, 'আমার প্রকৃত ধর্ষণকারীকে হয়তো কোনোদিনও খুঁজে পাবো না, সে হয়তো আরো অনেক মহিলার জীবন নষ্ট করেছে।'
সূত্র: বিবিসি