খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে অবহেলিত ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম অতিবাহিত হচ্ছে। প্রায় ৫৩ বছর আগে ভৈরব নদের পাশে নির্মাণ করা হয় এ অঞ্চলের একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালটি। যেখানে ডায়রিয়া, টিটেনাস, নিউমেটাল টিটেনাস, জলবসন্ত, হাম, জলাতঙ্ক রোগের জন্য সরকারি চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালটিতে নেই কোনো শিশু ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসক। যে কারণে কোনো শিশু রোগী পাচ্ছে না সেবা। তাছাড়া পুরাতন এই হাসপাতাল ভবন বর্তমানে পুরোটা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বনজঙ্গল ও গবাধিপশু গরু, ছাগলের চরণভূমি হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয়রা।
তাছাড়া হাসপাতালটির পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনে বর্তমান মাদকসেবীদের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা হিসেবে পরিচিত। হাসপাতালটির একতলা মূল ভবনের বাইরের জানালাগুলো ভেঙে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালটিতে বর্তমানে নেই পর্যাপ্ত জনবল। ৬ জন চিকিৎসক পদে জন্য রয়েছেন মাত্র দু’জন মেডিকেল অফিসার। শূন্য রয়েছে চারটি পদ। নেই অন্যান্য জনবল। আউট সোর্সিং কর্মচারী দিয়ে পদগুলো পূরণ করলেও বাকি পদগুলো শূন্য। হাসপাতালটির ফার্মাসিস্ট করছেন অফিসিয়াল কার্যক্রম। স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুর রহমান বলেন, বর্তমানে হাসপাতালটির পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনের মধ্যে মাদকসেবীরা নিরাপদে বসে মাদক সেবন করছে। যে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন অবগত। তারপরও এক প্রকার নীরব ভূমিকা পালন করছে। এখানে ভবনগুলো পরিত্যক্ত থাকায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমান হাসপাতাল চত্বরটি এক প্রকার বনজঙ্গল হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আশেপাশের বাসিন্দারা হাসপাতালের জায়গা দখল করছে। মূলত সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কখনো এই হাসপাতালটিতে নজর দিচ্ছে না। যে কারণে অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে হাসপাতালের সেবার কার্যক্রম।
খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের ইনচার্জ মেডিকেল অফিসার ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমান হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। প্রথমত- চিকিৎসক, নার্স ও আউট সোর্সিং কর্মচারী ওয়ার্ড বয়, আয়াসহ নিরাপত্তা প্রহরীও নেই। তাছাড়া এখানে পরিত্যক্ত আবাসিক ভবনে বহিরাগত মাদকসেবীরা প্রবেশ করে। পাশাপাশি হাসপাতালটি শিশু ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে পারছি না। হাসপাতালটিতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে খুলনার ডেপুটি সিভিল সার্জন খুলনা ডা. মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান এমপি একটি চিঠি দিয়েছেন হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য। জনবল সংকট থাকার জন্যও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবগত করা হয়েছে।