× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

উদ্বোধনের আগেই বন্ধ চমেক হাসপাতালে গরিব মুর্দার ফ্রি গোসলখানা

শেষের পাতা

জালাল রুমি, চট্টগ্রাম থেকে
২ ডিসেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রোগী ও স্বজনদের হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে একটি হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রোগীদের গোসল করানো ও দাফন নিয়ে বাণিজ্য। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন দূর-দূরান্ত থেকে আসা গরিব অসহায় স্বজনরা। এ নিয়ে শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামে একটি সেবা সংগঠন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ফ্রি লাশ ধোয়ার ঘর তৈরি করেন। বিনামূল্যে মরদেহ ধোয়ার পাশাপাশি আর্থিক সমস্যাগ্রস্ত রোগীদের জন্য বিনা খরচে কাফন ও এম্বুলেন্স সুবিধাও রাখে সংস্থাটি। তবে ঘর তৈরিসহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষে যখনই এই কার্যাক্রম উদ্বোধন করা হবে, তখন হঠাৎ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই লাশ ঘরে তালা লাগিয়ে দেন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে আসছে লাশ ধোয়া বাণিজ্য। মেডিকেল মসজিদকেন্দ্রিক একটি চক্র রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে লাশপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা আদায় করেন। বিনামূল্যের আধুনিক গোসলখানাটির কার্যক্রম শুরু হলে নিজেদের এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে তাই তারা এর বিরোধিতা করতে থাকে।
মূলত শক্তিশালী এই চক্রটিরই চাপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অনুমতি দেয়ার পরও উদ্বোধনের ঠিক আগেই বিনামূল্যের এই লাশ গোসলখানা বন্ধ করে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের লিখিত অনুমতি নিয়ে গত ৮ই আগস্ট গোসলখানা নির্মাণের কাজ শুরু করে সেবা সংস্থা আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয় ১৪ই সেপ্টেম্বর। যন্ত্রপাতি ক্রয়সহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন শেষে ডিসেম্বরের এক তারিখ এই আধুনিক ফ্রি মুর্দা গোসলখানার উদ্বোধন করার কথা ছিল। তবে উদ্বোধনের এক সপ্তাহ আগে ২২শে নভেম্বর সাইনবোর্ডটি নামিয়ে ফেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, গত ২২শে নভেম্বর সকাল আনুমানিক ১১টায় পরিচালকের নির্দেশে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও অন্যরা আমাদের টানানো সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলে দেন। একইসঙ্গে কক্ষের দরজায় শিকল দিয়ে তালা দেন। কিন্তু হঠাৎ কী কারণে এমনটি করা হলো, তা আমরা কিছুই জানি না। এরমধ্যে হাসপাতালের দেয়া নীতিমালা অনুযায়ী সাইনবোর্ড তৈরি করে গত বুধবার তা টাঙ্গাতে গেলে মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন এসে বাধা দেন। একইসঙ্গে সাইনবোর্ড লাগালে সমস্যা হবে বলে হুমকিও দেন।’ তিনি বলেন, এখন পরিচালক বলছেন আমরা নাকি নীতিমালা ভঙ্গ করেছি। কথিত এই নীতিমালার কোন শর্তটি অনুসরণ করিনি তা এখনো আমরা জানিনা। আসল ব্যাপার হচ্ছে পরিচালকসহ হাসপাতালের পুরো প্রশাসন সেখানকার একটি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। আর হাসপাতালের পরিচালক চাইলেও অনেককিছু করতে পারেন না।
আক্ষেপ করে সেবা প্রতিষ্ঠান শামসুল হক ফাউন্ডেশনের এই প্রধান নির্বাহী বলেন, দাতাদের ৫ লাখ টাকায় আমরা এই আধুনিক গোসলখানাসহ ফ্রি কাফন কার্যক্রম শুরু করেছি। অন্তত কিছুদিনও যদি আমরা এটা চালাতাম তাহলে নিজেদের সান্ত্বনা দিতে পারতাম। দাতাদেরও বলতে পারতাম। এখন পুরো বিষয়টা আমরা আইন এবং বিবেকবান মানুষের হাতে ছেড়ে দিলাম। আমাদের দৃঢ বিশ্বাস, এই মহতি কার্যক্রম শুরু করার এখনো সময় আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির মানবজমিনকে বলেন, ‘আমরা কীভাবে সাইনবোর্ড লাগাবো সেটিসহ কয়েকটি শর্তে এই প্রতিষ্ঠানটিকে অস্থায়ী ভিত্তিতে গোসলখানা বানানোর অনুমতি দেই। কিন্তু তারা শর্ত ভঙ্গ করেছে। যে কারণে আমরা তাদের অনুমতি বাতিল করে দিয়েছি। আর আমরা জানতে পেরেছি, তারা এই প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়।’ হাসপাতালে লাশের গোসল নিয়ে গরিব মানুষদের হয়রানির বিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব এই লোকের অপপ্রচার। লাশ গোসল নিয়ে এভাবে টাকা পয়সা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি এসব বিষয় ভালোভাবে খতিয়ে দেখি। আপনিও এসে খোঁজখবর নেন। এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
Monsur
৩ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ৮:৩০

Upsetting. Vested interest always go against any good and beneficial initiative. Don't give up. Everyone should unite and support this humanitarian effort.

অন্যান্য খবর