অভিযোগ রয়েছে, তিব্বত ও জিনজিয়াংয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে আসছে বেইজিং। নতুন করে ওই দুই অঞ্চলে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যার পেছনে একটি ভিডিও এবং মর্মান্তিক এক ঘটনা রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সম্প্রতি 'গুয়ানগুয়ান' নামের এক ব্যক্তির ধারণ করা ২০ মিনিটের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কনসেনট্রেশান ক্যাম্পের দৃশ্য দেখা যায়। যেই ক্যাম্পগুলোতে প্রদেশটির মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুরদের বন্দী করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। তবে চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে একে পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্র বলে দাবি করে আসছে। অবশ্য এ নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে দেশটির কমিউনিস্ট সরকার।
অস্থিরতা তৈরির অপর স্থান চীনের দখলে থাকা অঞ্চল তিব্বতের ডোমদা গ্রাম। যেখানে হান চাইনিজদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ প্রায় স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গ্রামটিতে বসবাসকারী উপজাতিদের জমি জোর করে অধিগ্রহণ করছে চীনা প্রশাসন । তবে ওই জমির জন্য ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণও দেয়নি তারা।
স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, একটি নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ হলেও স্থানীয়দের ক্ষতিপূরণ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে, গ্রামবাসী ও চীনা কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। বর্তমানে ওই প্রকল্পটির কাজ বন্ধ রাখা হলেও আবারো সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডোমদা অঞ্চলটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পানি ও বিদ্যুতের ভালো সরবরাহের জন্য পরিচিত। এখানকার যাযাবরের বসতিগুলো ভেঙে চীনা অভিবাসী ও পর্যটকদের জন্য আবাসন তৈরি করছে চীন। এতে স্থানীয়দের তীব্র আপত্তি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বাসিন্দাদের জমির মূল্য পরিশোধ না করারও৷
উল্লেখ্য, ১৯৫১ সাল থেকে চীনা কর্তৃপক্ষ তিব্বত এবং পশ্চিম চীনের তিব্বত অঞ্চলের উপর কঠোর দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে। শুধু তাই নয়, তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয়ের শান্তিপূর্ণ প্রকাশকে সীমিত করতে বাধ্য করা হয়েছে৷ সেই সঙ্গে নিপীড়ন, নির্যাতন, কারাদণ্ড এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হচ্ছে অঞ্চলটির মুক্তিকামী মানুষদের।
সূত্র: এএনআই