প্রায় ৩৫০০ প্রোপ্যাগান্ডা একাউন্ট মুছে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার। রাষ্ট্রীয় তথ্য প্রচারণার নামে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে ৬ টি দেশ থেকে পরিচালিত এই একাউন্টগুলো মুছে দেয়া হয়। দেশগুলো হচ্ছে, চীন, রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, মেক্সিকো, তানজানিয়া ও উগান্ডা। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
খবরে জানানো হয়েছে, মুছে ফেলা একাউন্টগুলোর মধ্যে ২ হাজার ৪৮টিই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থনে বিভিন্ন তথ্য প্রচার করতো। শিনজিয়াং-এ উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীনা দমন-পীড়নের যে অভিযোগ রয়েছে, এসব একাউন্ট থেকে তার সমর্থনে নানা তথ্য প্রচার করা হতো বলে জানিয়েছে টুইটার। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি জানিয়েছে, চীন সরকারের সঙ্গে যুক্ত এমন আরও শতাধিক একাউন্ট মুছে দিয়েছে তারা। চীনের বিরুদ্ধে উত্তর-পশ্চিমে থাকা শিনজিয়াং প্রদেশে জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অভিযোগ সেখানে ১০ লাখেরও বেশি উইঘুরকে শিবিরে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
এর আগে ফেসবুকও জানিয়েছিল যে, কোভিড-১৯ নিয়ে চীন সরকারের নানা প্রোপ্যাগান্ডা প্রচারের অভিযোগে ৫ শতাধিক একাউন্ট মুছে দিয়েছে তারা। টুইটার এবং ফেসবুক উভয়ই চীনে নিষিদ্ধ। তবে বেইজিং প্রায়শই আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার অবস্থানের প্রচারের জন্য মার্কিন এ দুটি সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে।
টুইটার জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার ‘ট্রোল ফার্ম’ নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ১৬ একাউন্ট মুছে দিয়েছে। এগুলো থেকে রুশ সরকারের সমর্থনে নানা প্রচারণা চালানো হতো। মধ্য আফ্রিকার রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে এসব একাউন্ট থেকে নানা ভুল তথ্য প্রচার করা হতো বলে অভিযোগ টুইটারের। সাম্প্রতিক সময়ে ওই অঞ্চলে নিজের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে মস্কো। ২০১৮ সালে সেখানে বড় পর্যায়ের সেনা পাঠায় রাশিয়া। টুইটার আরও জানিয়েছে, লিবিয়া ও সিরিয়ায় রাশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন সৃষ্টির জন্য ব্যবহৃত ৫০টি একাউন্টও অচল করে দিয়েছে তারা। এসব একাউন্ট থেকে দেশ দুটিতে রুশবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা চলছিল।
এছাড়া, নিষিদ্ধ করা অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে ২৭৬টি মেক্সিকো থেকে পরিচালিত হতো এবং ২৭৭টি পরিচালিত হতো ভেনিজুয়েলা থেকে। এসব একাউন্ট দেশ দুটির সরকারের সমর্থনে প্রোপ্যাগান্ডা চালাতো। আফ্রিকার রাষ্ট্র উগান্ডায় প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসাভেনির পক্ষে প্রচারের অভিযোগে ৪১৮টি একাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। তানজানিয়ায় বন্ধ করা হয়েছে আরও ২৬৮টি একাউন্ট। টুইটারের দাবি, শুধু প্রোপ্যাগান্ডা নয়, তথ্য বিকৃতি ও স্প্যামিং-এর কারণেও একাউন্ট মুছে দিয়েছে তারা।
অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের মতো, টুইটারও তার প্ল্যাটফর্মে ভুল তথ্যের পাশাপাশি বর্ণবাদী, সমকামিতা বিরোধী, ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করেছে। টুইটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা আগামী বছরের শুরুতে একটি মডারেশন রিসার্চ কনসোর্টিয়াম চালু করবে।