× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মৃত্যু, কারাগার, কী করবে বিপর্যস্ত হেফাজত

প্রথম পাতা

শাহনেওয়াজ বাবলু
৪ ডিসেম্বর ২০২১, শনিবার

২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চ বিরোধী সমাবেশ করে আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে সরব এই ‘অরাজনৈতিক’ সংগঠনটি। এরই মধ্যে গত ১৪ মাসে মারা গেছেন হেফাজতের দুই আমীর ও দুই মহাসচিব। সংগঠনটির মধ্যমসারির নেতাদের বেশির ভাগই এখন কারাগারে। এই অবস্থায় কী করবে হেফাজত? তা নিয়ে সংগঠনটির ভেতর-

বাইরে চলছে নানা আলোচনা ।
সংশ্লিষ্টরা বর্তমান সময়কে হেফাজতের জন্য কঠিন সময় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বলছেন, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণ ও সংগঠনকে টিকিয়ে রাখার মতো মুরব্বি খুঁজে বের করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে হেফাজতের সামনে। সবার সঙ্গে আলোচনা করতে সক্ষম হেফাজতে বর্তমানে এমন মুখও দেখা যাচ্ছে না।  

হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন রাব্বানী মানবজমিনকে বলেন, ‘সারা দেশে হেফাজতের হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা।
অধিকাংশ নেতা কারাগারে। এরই মধ্যে বছরের মাথায় বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা মারা গেলেন। মোটকথা কিছুটা হলেও নাজুক অবস্থায় আছে হেফাজত। তবে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’

এদিকে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমীর আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর থেকে ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মঈনুদ্দিন রুহী, রুহুল আমীন, দেলোয়ার হোসাইন, আবুল হাসনাত আমিনী, আব্দুল জব্বার, মুফতি আব্দুস ছাত্তার, মুফতি নাছির উদ্দিন ও আলতাফ হোসেনসহ অনেকে হেফাজতের আলাদা কমিটি করার বিষয়ে সক্রিয়। তারা বলছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে সব জেলা, থানা, শহর ও নগর কমিটিগুলো নবায়ন করে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে হেফাজতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। শফীপন্থিরা গতকাল চট্টগ্রামে বৈঠক করেছেন। আজ রাজধানীর শান্তিনগরে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে শফীপন্থি নেতা ও হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহী বলেন, ‘আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশের আলেম ওলামাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। কৌশলগত কারণে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।’  

কওমি ঘরানার মাদ্রাসা প্রধানদের সর্বাত্মক সমর্থন নিয়ে হেফাজতের আমীরের আসনে বসেছিলেন আল্লামা আহমদ শফী। হেফাজতের ওপর একটা সময় পর্যন্ত সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। যদিও মৃত্যুর আগে নিজ মাদ্রাসার ছাত্রদের আন্দোলনের মুখেই দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হেফাজতের আমীর। প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায়। পরে গত বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর মারা যান আহমদ শফী। তার মৃত্যুর পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়। এ বিষয়ে একটি মামলা এখনো চলমান। এরই মধ্যে আমীরের পদে আসেন প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বছর না যেতে তিনিও মারা যান। অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বাবুনগরী। এদিকে মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ার এক মাসের মাথায় ২০২০ সালের ১৩ই ডিসেম্বর মারা যান মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী। ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৭৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। অসুস্থ হওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে হেফাজতে ইসলামের সম্মেলনে মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন নূর হোসাইন কাসেমী। অবশ্য সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগরীর আমীরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কাসেমীর মৃত্যুর পর তার স্থলাভিষিক্ত হন আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী। গত শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে গত সোমবার দুপুরে তিনি মারা যান। এশার নামাজ শেষে ঢাকা থেকে তার মরদেহ চট্টগ্রামে নেয়া হয়। হাটহাজারী মাদ্রাসার মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

গত আগস্টে বাবুনগরীর ইন্তেকালের পর হেফাজতের আমীর হন তারই মামা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তার বয়স নব্বইয়ের বেশি। আমীর হওয়ার পর দু’বার তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

এদিকে গত মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপক সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৭ জন মারা যান। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৯টি মামলা হয়। গত ১১ই এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ১৮ই এপ্রিল গ্রেপ্তার হন আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন রাতে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা ধানমণ্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় যান। হেফাজত নেতারা দফায় দফায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
হেফাজতের বৈঠক আজ
নুরুল ইসলাম জিহাদীর মৃত্যুর পর সেদিনই হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয় মাওলানা সাজিদুল ইসলামকে। তিনি ১নং যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। এদিকে আজ বিকাল চারটায় সংগঠনের ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসবেন হেফাজতের শীর্ষ নেতারা। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মাখরাজুল উম্মাহ মাদ্রাসায় এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। হেফাজত সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে পূর্ণাঙ্গ করার বিষয় ছাড়াও সারা দেশের হেফাজতের নেতাকর্মীদের নামে মামলা এবং কারাগারে যারা রয়েছেন তাদের নিয়ে আলোচনা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
জামশেদ পাটোয়ারী
৪ ডিসেম্বর ২০২১, শনিবার, ১২:৪১

মৃত্যু অবধারিত বিষয়। জম্ম নিলেই মৃত্যু অনিবার্য। তাছাড়া বয়স্ক মুরুব্বীদের হেফাজতের উচ্চ পদ গুলোর জন্য নির্বাচিত করা হয়। হেফাজত কোন রাজনৈতিক দল নয়, হেফাজতের নেতারা তা বার বার উল্লেখ করে থাকেন। শাপলা চত্তরের ঘটনার কারণও ঠিক তাই। তারা কোন রাজনৈতিক দল নয়। হেফাজতের এই ভূমিকার কারণে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসেনা। কারণ তারা যে দাবী নিয়ে মাঠে নামেন, সরকার তাদের দাবী আংশিক মেনে নিলেই তারা মাঠ ছাড়েন। হেফাজত এই পর্যন্ত ধর্মীয় স্পর্শ কাতর বিষয়ে কোন বক্তব্য আসলে নির্দিষ্ট সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তারা মাঠে নামে। এর বাইরে হেফাজতের কোন কর্মসূচি নাই। আরো পরিস্কার করে বললে বলতে হয়, দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠায় হেফাজতের কোন কর্মসূচি নাই। হেফাজতের এতগুলো নেতা বন্ধি হবার পরও তাদের কোন কর্মসূচি নাই।

Borno bidyan
৩ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ৫:৩৯

যুগে যুগে ইসলামি সংগঠন তথা আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র ছিলো বা এখনো আছে! হামলা মামলা তথা রাষ্ট্রীয় খড়গ কখনো থেমে ছিল না এবং আগামীতেও থেমে থাকবে না! আর জন্ম মানেই মৃত্যুর স্বাদ -তাকে নিতেই হবে! আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের এমন মৃত্যু দান করেন, যা তার কাছে প্রিয়! আর জালেমের মৃত্যু কেমন তা তো ইতিহাসে অসংখ্য নিদর্শন বিদ্যমান!

অন্যান্য খবর