কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ৩৫ শতক জমি জবর দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবস্থ সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিমুদ্দিনের পুত্রবধূ আনজিনা বেগম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম, স্বামী মিজানুর রহমান মিজু ও জমি বিক্রেতা মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী। সংবাদ সম্মেলনে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আহসান হাবীব নীলু, সাধারণ সম্পাদক খ.ম আতাউর রহমান বিপ্লবসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরন্নবী চৌধুরী খোকনের পূত্র রাকিনুল হক চৌধুরী ছোটন প্রভাব খাটিয়ে মোটর সাইকেলে অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগের কর্মীকে নিয়ে ইনজাংশনকৃত জমি জবরদখল করে গত তিনদিন ধরে সেখানে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ফেলে ভরাট করছে। তারা আমাদের লাগানো গাছপালা কেটে ফেলে সেখানে ঘর তুলছে। এ সময় থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই অন্যায়ের সুষ্ঠু বিচার চাই। অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলীর কাছ থেকে ৫৯ শতক জমি রেজিস্ট্রি মূলে ক্রয় করা হয়।
গত সাড়ে ৪ বছর ধরে আমরা সেই জমি ভোগদখল করে আসছি। এখন তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সেই জমি জবরদখল করে জোরপূর্বক মাটি ফেলে ঘর তুলছে।
জমিদাতা মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে জানান, আমি ৪০ বছর পূর্বে ওই জমি কিনেছি। কিন্তু ছোটন তার ভাই শোভনসহ এদের সাঙ্গপাঙ্গরা আমার বাড়ি ভাঙ্গি চুরমার করি দেয়। আমি সেই দুঃখে আমার মামা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলিমুদ্দিনের পুত্রবধূ আনজিনা বেগমের কাছে জমি রেজিস্ট্রি করে দেই। পরে আমি অনেক দূরে গিয়ে বাড়ি করে আছি। তিনি দুঃখ করে বলেন, সরকার এদেরকে পদ দিতেছে। আর এরা পদ নিয়া সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতেছে। এরা ভূরুঙ্গামারী থানা জ্বলে পুড়ে খাইতেছে। কেন সরকার এসব দেখে না।
এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রাকিনুল হক চৌধুরী ছোটন বলেন, অভিযোগকারীর স্বামী মিজানুর রহমান মিজু নিজেই একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যু। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। জেলও খেটেছে। বিরোধপূর্ণ জমির সঙ্গে আমি বা ছাত্রলীগের কারও সম্পৃক্ততা নেই। আমার নেতৃত্বে কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃত জমির মালিক নজরুল ইসলাম নিজেই সেখানে ঘর তুলছে। অভিযোগকারীরা জাল দলিল করে জমিটি দখলে নেয়।
এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে বসে সমঝোতার জন্য কোর্টের মাধ্যমে সমাধান নিতে পরামর্শ দিয়েছি। সেখানে নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।