× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২০ হাজার টন সার উধাও যমুনা সার কারখানার ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

বাংলারজমিন

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
৭ ডিসেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার

যমুনা সার কারখানা (জেএফসিএল) থেকে মাত্র এক চালানেই ৩০ কোটি টাকা লোপাট করে নিয়েছে সিন্ডিকেট। উধাও করে দিয়েছে প্রায় ২০ হাজার টন আমদানিকৃত সার। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিস্থ দেশের বৃহৎ ও একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠানের ভেতরে-বাইরে গড়ে উঠা শক্তিশালী সিন্ডিকেটকে সামাল দিতে পারছে না নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি)। সার কেলেঙ্কারির ঘটনায় নামমাত্র ৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও তাতে আস্থা নেই স্থানীয় সচেতন মহলের।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, সরকারি মূল্য হিসেবে সমুদয় টাকা উত্তোলন দেখালেও কারখানার গোডাউনে ঢোকার আগেই সারগুলো লাপাত্তা হয়ে যায়। গত ১৮ই নভেম্বর বিসিআইসি চেয়ারম্যান শাহ্‌ মো. এমদাদুল হকের স্বাক্ষরিত বরখাস্তের একটি পত্র কারখানায় আসার পরপরই তোলপাড় শুরু হয়। এর আগে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সার উধাওয়ের বিষয়টি গোপনে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। বিসিআইসি চেয়ারম্যানের ওই পত্রে ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সার ঘাটতিসহ দায়িত্বে অবহেলা, অসদাচরণ, অদক্ষতা, চুরি, আত্মসাৎ, তহবিল তছরুপ ও প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে কারখানার বাণিজ্যিক বিভাগের ব্যবস্থাপক (বিক্রয় প্রধান) ওয়ায়েছুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া কারখানার মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) খোকন চন্দ্র দাস, ব্যাগিং ইনচার্জ (উপ-প্রধান রসায়নবিদ) নজরুল ইসলামকেও সাময়িক বরখাস্ত করেন বিসিআইসি চেয়ারম্যান।
এ ছাড়া আরও ৭ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়। বিসিআইসি চেয়ারম্যানের পত্র মোতাবেক জানা যায়, ২০১২ সাল থেকে বিক্রয় শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ওয়ায়েছুর রহমানের যোগসাজশে কারখানায় উৎপাদিত সারের গুদাম নম্বর ১ ও আমদানিকৃত সারের গুদাম নম্বর ২ এবং বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত সারের ব্যাগ রক্ষণাবেক্ষণ ও বিতরণের বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২৬শে সেপ্টেম্বর বিসিআইসি’র চিফ অফ পার্সোনাল মোহাম্মদ জাকির হোসেনের স্বাক্ষরে বিসিআইসি’র কর্পোরাল ডাইরেক্টর মো. ছাকী হোসেনকে আহ্বায়ক ও জেএফসিএল-এর সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. সিদ্দিকুর রহমানকে সদস্য সচিব করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি সরজমিন তদন্ত করে কারখানার গুদামে রক্ষিত উৎপাদিত সার ১৯ হাজার ১৩৩.১৩ টন ঘাটতির প্রমাণ পায়। যার সরকারি বাজারমূল্য দাঁড়ায় ৩০ কোটি ২৬ লাখ ৬৩৬ টাকা। পারস্পরিক যোগসাজশে সার আত্মসাতের অভিযোগ সত্য উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি বিসিআইসি চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে বিসিআইসি চেয়ারম্যান শাহ্‌ মো. এমদাদুল হক অভিযুক্ত ৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও ৭ জনকে শোকজ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, কারখানার শক্তিশালী সিন্ডিকেট যোগসাজশে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকার সার আত্মসাৎ করে আসছে। বিভিন্ন সময় নামেমাত্র তদন্ত কমিটি ও অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করলেও পরবর্তীতে অধিকাংশ ঘটনাই ঢাকা পড়ে যায়। রহস্যজনক কারণে অভিযুক্তরা পুনরায় স্বপদে বহাল কিংবা বিসিআইসি’র অন্য কোনো কারখানায় বদলি হয়ে যান। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত (বরখাস্তকৃত) কর্মকর্তাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন বলেন, সার ঘাটতি ও অনিয়মের অভিযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিসিআইসি থেকে ৩ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর