× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হবিগঞ্জে ইউপি নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবির নেপথ্যে

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
৭ ডিসেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার

২য় ও ৩য় ধাপে হবিগঞ্জের ২৬টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। মাত্র ১১টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। গত ২৮শে নভেম্বর তৃতীয় ধাপে হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলায় ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ দলীয় ৮ জন, বিএনপি নেতা ৫ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৫ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩ জন জয়ী হয়েছেন। এর আগে দ্বিতীয় ধাপে গত ১২ই নভেম্বর আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নির্বাচনে ৩টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন।
আওয়ামী লীগের পরাজয়ের নেপথ্যে মনোনীত প্রার্থীদের জনসম্পৃক্ততা না থাকা,  যোগ্যতা ও দূরদর্শিতার অভাব ও কমান্ডিং পাওয়ারের অভাবকেই দায়ী করেছেন দলের স্থানীয় ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাদের মতে বেশিরভাগ ইউনিয়নেই প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে নতুন মুখ। অনেক ইউনিয়নে পরীক্ষিত যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে তদবীরের কারণে দেয়া হয়েছে অযোগ্যদের। প্রভাবশালীরা বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় অনেক ইউনিয়নে দলীয় নেতাকর্মী নির্বাচনী মাঠে ছিলেন নিস্ক্রিয়।
যা নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জেলার ৩টি উপজেলার ইউপি নির্বাচনের মধ্যে নৌকার সবচেয়ে বেশি ভরাডুবি ঘটেছে নবীগঞ্জ উপজেলায়।  উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন নির্বাচনে মাত্র ৪টিতে নৌকা জয়লাভ করে। ৯টি ইউনিয়নেই ভরাডুবি ঘটে নৌকার প্রার্থীর। এর মধ্যে ইনাতগঞ্জ ও করগাঁও ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এতে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। ২৮শে নভেম্বর নির্বাচনে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টিতে নৌকা, ৪টিতে বিদ্রোহী, ৩টিতে বিএনপি সমর্থিত ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১নং বড়ভাকৈর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রঙ্গলাল দাশ ঘোড়া প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী সমর দাশ। ২নং বড়ভাকৈর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আক্তার হোসেন নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মেহের আলী মালদার। ৩নং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে নৌকার লজ্জাজনক হার হয়েছে বলে দলটির নেতাকর্মীরা মনে করছেন। ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নে বিএনপির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল ছালিক আনারস প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী আবু সাঈদ এওলা। ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোফাজ্জল হক। ৬নং কুর্শি ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ খালেদুর রহমান চৌধুরী আনারস প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। এখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মুকিত। ৭নং করগাঁও ইউনয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্মলেন্দু দাশ রানা ঘোড়া প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছাইম উদ্দিন। ৮নং সদর ইউনিয়নে নৌকার হাবিবুর রহমান হাবিব নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জাবেদুল ইসলাম চৌধুরী সাজু। ৯নং বাউসা ইউনয়নে বিএনপির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিকুল ইসলাম শিশু জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী। ১০নং দেবপাড়া ইউনিয়নে সতন্ত্র প্রার্থী শাহরিয়াজ নাদির সুমন জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী আব্দুল মোহিত চৌধুরী। ১১নং গজনাইপুর ইউনয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইমদাদুর রহমান মুকুল জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সফিউল আলম। এ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী পেয়েছেন লজ্জাজনক ভোট। ১২নং কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। ১৩নং পানিউন্দা ইউনয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইজাজুর রহমান নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিবুল হাসান মামুন।
জামানত হারিয়েছেন করগাঁও ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী বজলুর রহমান। জামানত হারানো আরেকজন ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আছাবুর রহমান জীবন। দীর্ঘ সময় এলাকার কোনো কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত ছিলেন না।  হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনে বিজয়ীরা হলেন- লুকড়া ইউনিয়নে বিএনপি নেতা মো. কাউছার রহমান (স্বতন্ত্র), রিচি ইউনিয়নে মো. আব্দুর রহিম (নৌকা), পইল ইউনিয়নে সৈয়দ মইনুল হক আরিফ (স্বতন্ত্র), গোপায়া ইউনিয়নে বিএনপি নেতা এমএ মন্নান (স্বতন্ত্র), ইউনিয়নে তেঘরিয়া এম এ মোতালিব (নৌকা), রাজিউড়া ইউনিয়নে বদরুল করিম দুলাল (নৌকা), নিজামপুর ইউনিয়নে তাজউদ্দীন আহমেদ (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), লস্করপুরে মাহবুবুর রহমান হিরো (নৌকা)। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নির্বাচনে ৫টি ইউনিয়নের নির্বাচনে ৩টিতে আওয়ামী লীগ ২টি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন। জানা যায়, এক নম্বর সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মোবারুল হোসেন। বদলপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সুষেনজিৎ চৌধুরী। কাকাইলছেও ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া। এছাড়া জলসুখা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন বিদ্রোহী প্রার্থী ফয়েজ আহমেদ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর