বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে ভান্ডারিয়ায় তিনদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। বৃষ্টির কারণে কর্মহীন হয়ে কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছেন তারা। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাসের কারণে আমন ক্ষেতের ধানগাছগুলো হেলে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলার আমন ও খেসারি ডালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। রিকশাযাত্রী আ. মালেক হাওলাদার জানান, বৃষ্টির কারণে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। রিকশা ভাড়া দ্বিগুণেরও বেশি। একটু কিছু হলেই সব ভাড়া বেড়ে যায়, আমরা সাধারণ মানুষই সব সময়ই বিপদে থাকি।
এদিকে, উপজেলার ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের শিয়ালকাঠী গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, তিনদিনের টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমন ধানগাছগুলো মাটিতে ন্যুয়ে পড়েছে। নূয়েপড়া গাছগুলোর নিচেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। এছাড়া বৃষ্টিতে রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রমতে, এ বছর ৯ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে আমন ধান, রবিশস্য প্রায় ৪শ’ হেক্টর, খেসারি ২ হাজার ৫০ হেক্টর চাষ করা হয়েছে। রবিশস্য অসময়ের বৃষ্টির কারণে প্রায় ৫০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। বর্গাচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০ শতক জমিতে খেসারি, করোলা ও ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন বীজ কিনে চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ক্ষেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। শিয়ালকাঠী গ্রামের কৃষক মনির গাজী জানান, ‘বৃষ্টিতে অনেক ধান হেলে পড়েছে। অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে যাবে এবং রবিশস্যের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষি কাজ করে লোকসানে আছি। তবে এবার আমন ধান দেখে লোকসানের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। ঝড়বৃষ্টির কারণে চাষাবাদের খরচের ধার-দেনা কাটিয়ে লাভের মুখ দেখা যাবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, আমন ধানগাছ মাটিতে ন্যুয়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ডালের আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। আমরা উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সবসময় কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছি।