আগামী ২২শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ)-এর নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠছে দেশের ক্রীড়াঙ্গন। এরইমধ্যে ৩৫ পদের বিপরীতে ৪৪টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। বিওএ’র বর্তমান মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা পুনরায় এই পদে থাকছেন। পরিবর্তন আসতে পারে সহ-সভাপতি ও উপ-মহাসচিব পদে। কোষাধ্যক্ষ পদেও পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সদস্য পদে আসতে পারে বেশ কিছু নতুন মুখ। অলিম্পিকের নির্বাচনে এবার কাউন্সিলর সংখ্যা ৮৪।
এই ৮৪ জনের মধ্য থেকে ৩৭ জনের নির্বাহী কমিটি হওয়ার কথা। কিন্তু আইওসি সদস্য, অলিম্পিয়ান কোটা না থাকায় ৩৭ এর পরিবর্তে এই সংখ্যাটা সব সময় ৩৫ থাকে। ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী এবারও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব হচ্ছেন সৈয়দ শাহেদ রেজা। বরাবরের মতো তার পছন্দ অপছন্দেই গঠিত হবে এবারের নির্বাহী কমিটি। বর্তমান কমিটির পাঁচ সহ-সভাপতির মধ্যে তিন সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ, মাহবুব আরা গিনি, অঞ্জন চৌধুরি পিন্টু স্বপদে বহাল থাকছেন। অন্য দুই সহ-সভাপতির মধ্যে বাদল রায় প্রয়াত এবং নাজিমউদ্দিন চৌধুরী এবার কাউন্সিলরই হতে পারেননি। এই দুই জনের শূন্যস্থানে কারা আসবেন এ নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। এক্ষেত্রে বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে। অপর পদে আসার সম্ভাবনা আছে আরচারি ফেডারেশনের সভাপতি লে: জে: (আ:) মাইনুল হাসানের। পরিবর্তন আসতে পারে উপ-মহাসচিব পদেও। বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকু স্বপদে বহাল থাকছেন। তবে বর্তমান উপ-মহাসচিব আসাদুজ্জামান কহিনুরের পরিবর্তে আসতে পারেন নজিব আহমেদ। বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারশেনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপুরও উপ-মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে সদস্য হবেন হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কহিনুর। কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ডিআইজি হাবিবুর রহমানও উপ-মহাসচিব পদ প্রত্যাশী। তবে তার সদস্য হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। পাশাপাশি এবার অলিম্পিকের কমিটিতে অভিষেক হতে পারে কাবাডি ফেডারেশনের কাউন্সিলর নেওয়াজ সোহাগ, সাবেক তারকা ফুটবলার সাইক্লিং থেকে কাউন্সিলর হওয়া আব্দুল গাফফারের। সদস্য হয়ে ফিরতে পারেন বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খন্দকার হাসান মুনির। ব্যাডমিন্টন থেকে আমির হোসেন বাহারের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে। চমক আসতে পারে কোষাধ্যক্ষ পদে। দীর্ঘদিন বিওএ’র কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করা কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপলের পরিবর্তে এই পদে আসতে পারেন বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক এমবি সাইফ বি মোল্লা। বাস্কেটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে সরকারও কোষাধ্যক্ষ হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। অলিম্পিকের নির্বাচনে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী চারজন কাউন্সিলর দেন। বিগত মন্ত্রীর চার কাউন্সিলরের মধ্যে তিনজনই বহাল রেখেছেন বর্তমান মন্ত্রী। শোয়েব চৌধুরীর বদলে সাবেক অ্যাথলেট লিটি এবার মন্ত্রীর কোটায় কাউন্সিলর হয়েছেন। তিনিও সদস্য হচ্ছেন। শোয়েব চৌধুরী এবার ফেন্সিং এসোসিয়েশন থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন। ৪৪টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে তিনি কেবল দুইটি মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। বাকিগুলো বর্তমান কমিটির মহাসচিবের নেতৃত্বে নেয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের আগে মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজার সঙ্গে দেখাও করেছেন আগ্রহীরা। অনেক প্রার্থী মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর করেছেন। কে কোন পদে থাকবেন সেটা দুই একদিন পর চূড়ান্ত হবে। বিওএ বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন বলেন, ‘পুরো বিষয়টি মহাসচিব শাহেদ রেজা ভাই সমন্বয় করছেন।’ মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আবদুল গাফফার বলেন, ‘অলিম্পিক দেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া সংস্থা। আমি ফুটবলার হলেও পুরো ক্রীড়াঙ্গনে সবার সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে। এজন্য অলিম্পিকে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে চাই। সবাই মিলে আলোচনার ভিত্তিতে আমাকে যে পদে দেবে আমি সেখানেই কাজ করতে চাই।’ আগামী ৯ই ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র জমা। আপত্তি, যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচন কমিশন ১৫ই ডিসেম্বর বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে। ১৭ই ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন। ১৮ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও ২২শে ডিসেম্বর অলিম্পিক প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।