জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ওলাফ শলৎস। এরমধ্য দিয়ে শেষ হলো অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের ঐতিহাসিক ১৬ বছরের শাসনকাল। জার্মান পার্লামেন্টে তার তিন দলীয় জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর তাকে দাড়িয়ে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এরফলে জার্মানির ক্ষমতায় আসলো ওলাফের মধ্য-বামপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেট দল। একইসঙ্গে সরকারে থাকছে গ্রীন পার্টি ও ব্যবসা বান্ধব ফ্রি ডেমোক্রেট পার্টি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়েছে, ওলাফের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের ৩১ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি হলো। ৬৩ বছর বয়স্ক ওলাফ এখন চ্যান্সেলর হিসাবে তার স্থান গ্রহণ করলেন। পার্লামেন্টে তার জোট ৩৯৫ ভোটের মধ্যে ৩০৩ ভোট পেয়েছে।
এরপরই জার্মানির ৯ম ফেডারেল চ্যান্সেলর হিসাবে শপথ নেন ওলাফ। তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ওয়াল্টার।
উল্লেখ্য, তিন দলই আগে থেকে মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে রেখেছিল। ফলে বুধবার শপথবাক্য পাঠ করে যে যার মন্ত্রণালয়ের হাল ধরতে যাচ্ছেন৷ এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে এসপিডি দলের কার্ল লাউটারবাখের মনোনয়ন সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছেন৷ করোনা সংকটের সময় বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি দল, মত নির্বিশেষে জনসাধারণের একটা বড় অংশের আস্থা অর্জন করার পর তার নামই এই পদের জন্য সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছিল৷
জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, নতুন সরকারি জোটের ঘোষিত অভিন্ন কর্মসূচির উপর কোন শরিক দল শেষ পর্যন্ত কতটা প্রভাব রাখতে পারলো, সে বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই৷ এক জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী সবচেয়ে ছোট শরিক হওয়া সত্ত্বেও এফডিপি দলই নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় সবচেয়ে সফল হয়েছে৷ অন্যদিকে দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে সবুজ দলকে সবচেয়ে বেশি আপোশ মেনে নিতে হয়েছে বলে অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন৷
জার্মানির নতুন সরকার সত্যি বেশ কিছু ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে৷ ন্যূনতম মজুরি ৮ ইউরো ৬০ সেন্ট থেকে বাড়িয়ে ঘণ্টায় ১২ ইউরো করা হচ্ছে৷ দীর্ঘকাল বেকার থাকা মানুষের জন্য আরও উদার ভাতার ব্যবস্থা করা হবে৷ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারের শিশুদের কল্যাণে আরও আর্থিক সহায়তা করবে সরকার৷ জার্মানির বাসস্থান সংকট মোকাবিলা করতে বছরে কমপক্ষে চার লাখ করে নতুন বাসস্থান নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করা হয়েছে৷ এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে জার্মানিতে উৎপাদিত বিদ্যুতের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি থেকে আসবে৷ ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমাতে গণপরিবহণ ব্যবস্থার আরও উন্নতি করতে চায় ওলাফ শলৎসের সরকার৷ তবে সরকারি ঋণের ঊর্দ্ধসীমা লঙ্ঘন না করেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী কর্মসূচিগুলির জন্য বাড়তি অর্থ সংগ্রহ করতে হবে৷