× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হারের নিয়তি খণ্ডাতে পারেনি বাংলাদেশ

খেলা

স্পোর্টস রিপোর্টার
৯ ডিসেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার

শেষ বিকালে বাকি ২৪ মিনিট। প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন তাইজুল ইসলাম। সময় নষ্ট করতে অযথাই সাদাপোশাক ঠিক করে নেয়ার বাহানা করছেন। কিন্তু এদিন আলো কমে এলেও আম্পায়াররা অনড়। আলোর স্বল্পতায় দিনের খেলা পরিত্যক্ত করেননি। যেমনটা করেছিলেন ঢাকা টেস্টের আগের তিনদিন। অবশেষে একে একে সবক’টি উইকেট খোয়ালো বাংলাদেশ। নিশ্চিত হলো ৮ রান ও ইনিংস ব্যবধানে হার।
টি-টোয়েন্টির পর পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টেও হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। হারের  যে নিয়তিতে বাঁধা পড়েছিল টাইগাররা তা খণ্ডাতে পারেনি। ভাগ্য যদিও দারুণ সহযোগিতা করেছে। বৃষ্টির হানায় প্রথম দুইদিনে খেলা হয়েছে মাত্র ৬৩.২ ওভার। তৃতীয় দিন ভেসে গেছে। চতুর্থ দিনও দিনের ২৫ ওভার আগে আলোর স্বল্পতায় খেলা শেষ হয়। সেখানে পাকিস্তানের এক ইনিংসে মাত্র ৪ উইকেট খুইয়ে করা ৩০০ রান তাড়া করতে গিয়ে খেই হারায় টাইগার ব্যাটাররা। দুই ইনিংসে তাদের ব্যাট থেকে আসে ২৯১ রান তাও ২০টি উইকেট হারিয়ে। এমন ব্যাটিং দেখে স্বাভাবিক প্রশ্ন দলের টেস্ট সক্ষমতা নিয়েও। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে ৩২ ওভার ব্যাট করে ৮৭ রানে অলআউট হয় দল। নিশ্চিতভাবেই ফলোঅনে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রান তাড়া করতে পারলে এড়ানো যেত ইনিংস হার। এমনকি দিন পার করতে পারলেও হতো ড্র। কিন্তু কোনোটিই করতে পারেনি বাংলাদেশ! এমন হারকে সঙ্গী করেই টেস্ট সিরিজ খেলতে গতকাল রাতেই নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে টাইগাররা।  
এ জয়ে পাকিস্তানের নায়ক স্পিনার সাজিদ খান। প্রথম ইনিংসে ৮টির পর দ্বিতীয় ইনিংসে সাজিদ খানের শিকার ৪ উইকেট। ম্যাচে তিনি নিলেন মোট ১২৮ রানে ১২ উইকেট, বাংলাদেশের বিপক্ষে যা টেস্টে চতুর্থ সেরা বোলিং। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতে ম্যাচ বাঁচানোর আশা, তখনই বাবর আজমের বলে অযথা সুইপ করতে গিয়ে উইকেট হারান মিরাজ। এরপর সাজিদ এসেই ভাঙেন সাকিবের প্রতিরোধ। ১৩০ বল খেলে সাকিব করেন ৬৩ রান। এরপর শেষ উইকেটও নিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন সাজিদই। ম্যাচের প্রথম চারদিনে খেলা হয়েছে সব মিলিয়ে দেড় দিনেরও কম। বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই ম্যাচও হারার পথ খুঁজে নিল বাংলাদেশ। সিরিজ থেকে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট পেলো পাকিস্তান। বাংলাদেশের প্রথম পয়েন্ট পাওয়ার আশা মিলিয়ে গেল ভুল আর বাজে পারফরমেন্সে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি থেকে টেস্ট সিরিজ সব ক্ষেত্রে হারের জন্য দায়টা কার, ব্যাটারদের নাকি গোটা টিম ম্যানেজমেন্টের! মাঠের পারফরমেন্সের দিকে তাকালে দায়টা সরাসরি ব্যাটারদের। কিন্তু এর নেপথ্যে দল গঠনে সমন্বয়হীনতা, অদূরদর্শিতা দারুণভাবে চোখে পড়েছে। বিশেষ করে ওপেনার টপ অর্ডারে অভিজ্ঞদের জায়গা না দেয়া তরুণদের ওপর অতিমাত্রায় আস্থাই দলের হারের অন্যতম কারণ বলা যায়। ওপেনিংয়ে সাদমান ইসলাম অনিকের সঙ্গী হিসেবে সাইফ ও জয়কে দেয়া নির্বাচকদের ভুল সিদ্ধান্ত তাই প্রমাণ করেছে। প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩ রান। দ্বিতীয় ইংসে দু’জনের ব্যাট থেকে আসে ৮ রান। সাদমান ২  জয় আউট হন ৬ রান করে। প্রথম ইনিংসে মাত্র দুই ব্যাটসম্যানই পেরেছে দুই অংশ স্পর্শ করতে।
পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেটে ৭৬ রান তুলে চতুর্থদিন শেষ করে বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতে প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। কিন্তু পঞ্চম দিন সকালে পাকিস্তানের ৬ ওভারের বেশি সময় লাগেনি সাকিবসহ বাংলাদেশের শেষ ৩ উইকেট তুলে নিতে। সাকিব থামেন ৩৩ রানে, বাংলাদেশ অলআউট ৮৭ রানে। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেও ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। তবে মুশফিকুর রহীম ও লিটন দাসের ব্যাটে কিছুটা আলোর রেখা দেখা যায়। দু’জনে ৪৭ রানের জুটি গড়ায় মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে পথ হারায় দল। দারুণ খেলতে থাকা লিটন আউট হন ৪৫ রানে। এরপর মুশফিক লড়াই করেন সাকিব নিয়ে। আবারো আশায় বুক বাঁধে টাইগার ভক্তরা। কিন্তু অহেতুক রানআউট হয়ে সেই আশায় জল ঢালেন অভিজ্ঞ মুশফিক। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৮ রান। শেষ সেশনে ইনিংস হার এড়াতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান, হাতে ৪ উইকেট। সাকিব আল হাসান অপরাজিত ছিলেন ২৪ রানে। চা বিরতির পর নতুন ব্যাটার মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ২৩.১ ওভার কাটিয়ে দেন সাকিব। ততক্ষণে জুটিতে রানও যোগ হয়ে যায় ৫১ রান। যেভাবে দু’জনে ব্যাট করছিলেন তাতে দিনের বাকি সময় ও ওভারগুলো অনায়াসেই কাটিয়ে দেওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গতকাল প্রথমবার বল হাতে নেওয়া বাবর আজম আজ গুরুত্বপূর্ণ সময়েই বল হাতে নিয়ে ভাঙেন জুটি। মিরাজকে ৭০ বলে ১৪  এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে পথের কাঁটা সরান।  এরপর আর ১০ ওভারও টিকেনি বাংলাদেশের ইনিংস। পৌনে তিন ঘণ্টা ক্রিজে টিকে দলকে টেনে নেওয়া সাকিব ফেরেন সাজিদ খানের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে। ১৩০ বলে তার ব্যাটে ৯ চারে ৬৩ রান। তার আউট হওয়ার সময় ইনিংস হার এড়াতে প্রয়োজন ১৩ রান। শেষ দুই উইকেটে ৫ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ৩১ বল খেলা তাইজুল ইসলাম সাজিদ খানের চতুর্থ শিকার হন। রিভিউ নিলেও বাঁচা যায়নি, ৮ রানের জয়ে ততক্ষণে বাঁধভাঙা উল্লাস পাকিস্তান শিবিরে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর