কালীঘাটের বাড়ির নিভৃতবাস থেকে দেয়া আদেশ মাথায় নিয়ে জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী গোয়া রওনা হচ্ছেন সেখানকার নির্বাচনে কো অর্ডিনেটরের দায়িত্ব নিয়ে। মন্ত্রীসভায় তাঁর সহকর্মী অরূপ বিশ্বাস করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর মমতা নিভৃতবাসে চলে যান। কিন্তু, নিভৃতবাসে গিয়েও রেহাই নেই, একটির পর একটি সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে তাঁকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টক্কর দেয়া, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে ফুটপ্রিন্ট বসানোর জন্য তৃণমূল নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পাখির চোখ এখন ২০২২ এর গোয়ার বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৩ এর ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে সরিয়ে সৌরভকে দায়িত্ব দিয়ে মমতা বুঝিয়ে দিলেন গোয়া জয় করতে তাঁর হোলটাইমর চাই। মহুয়া মৈত্রর মত পার্টটাইম সাংসদ কাম কোঅর্ডিনেটর দিয়ে কাজ চলবেনা। গোয়া এবং ত্রিপুরাকে বেছে নেওয়ার কারণ? গোয়া যে বিজেপির আকিলিস হিল তা মমতা জানেন। গত বিধানসভার নির্বাচনে গোয়া দখল করতে বিজেপিকে কি ভাবে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছিল তাও মমতার জানা।
এবার তিনি নিজে দুবার গোয়া সফর করে এসেছেন। দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফেলিক্স রিবেরিও এবং আলেমাও চারচিল এখন তৃণমূলে।
সিংহশা বক আহত হলেও সিংহই থাকে। জাহাজ ব্যাবসায়ী আলেমাও এর আর্থিক সহায়তা তৃণমূল পাবে, রিবেইরোর রাজনৈতিক প্রভাব ও। গোয়ার দুই তারকা টেনিসের লিয়েন্ডার পেজ ও ফুটবলার আলভিটো ডিকোনহা কে দলে টোনেছে তৃণমূল। সর্বশক্তি নিয়ে গোয়ায় ঝাঁপাচ্ছেন মমতা। গোয়ায় জিততে পারলে, নিদেন ভালো ফল করলেই যে তৃণমূল সর্বভারতীয় লাইমলাইট এ আরো প্রতিভাত হবে তা জানেন তিনি। তাই, তাঁর রথ এখন কঙ্কন অভিমুখী। মার্কিন একটি রেটিং সংস্থা ২০২৪'র লোকসভা নির্বাচনে মমতা কে মোদির প্রধান প্রতিপক্ষ বলে বর্ণনা করেছে। কিন্তু, মোদির বিজয়রথ থামাতে ২০২৩ এ ত্রিপুরা জয় মমতার কার্ড এ আছে।
মোদি মঙ্গলবার ত্রিপুরা এসেছিলেন। জনসভা করেছেন। এতদিন সেনাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায় কে ত্রিপুরায় বারবার পাঠিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছেন মমতা। এবার নিজে আসরে নামবেন। বিজেপির বিপ্লব দেব সরকার গত বিধানসভার নির্বাচন থেকে ক্ষমতায় আছে। বিজেপি সরকারের ত্রুটি বিচ্যুতিই মমতার হাতিয়ার। ত্রিপুরার বাঙালিদের জন্য এবং ত্রিপুরিদের জন্য সেন্টিমেন্টাল কার্ড খেলছে তৃণমূল। খেলা হবে স্লোগানের ঝড় তারা তুললেও বিজেপি তাদের সেন্টারলাইন এ বল বসাতে দিতেই রাজি নয়। তাই, ত্রিপুরার লড়াই এখন থেকেই জমে গেছে। দুই রাজ্যের নির্বাচনের দিকে চোখ রেখেই মমতা আপাতত ঘুঁটি সাজাচ্ছেন।