চীন ও ইরানের মধ্যে গত বছর ২৫ বছরের জন্য ব্যাপক বিস্তৃত সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দোল্লাহিয়ান শুক্রবার বলেছেন, ওই চুক্তিটি এখন বাস্তবায়নের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। প্রথমবারের মতো তিনি চীন সফর করছেন। সেখানে শুক্রবার দিনশেষে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন সফরের প্রস্তুতি নেয়ার সময়ই আমরা ওই চুক্তিটি শুক্রবার থেকে বাস্তবায়নের দিন হিসেবে চিহ্নিত করার প্রস্তুতি নিয়েছি। চুক্তির অধীনে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প বা চুক্তি ঘোষণা করেননি তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। ২০২১ সালের মার্চে চীনের সঙ্গে এই ‘স্ট্র্যাটেজিক একর্ড’ স্বাক্ষর করেন ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
এই চুক্তির অধীনে রয়েছে উভয় দেশের অর্থনীতি, সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতা। দেশ দুটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তারা এমন চুক্তিতে উপনীত হয়। উপরন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানের কাছ থেকে যথেষ্ট কমমূল্যে তিন বছর ধরে তেল কিনছে চীন। এ বিষয়ে প্রকৃত চিত্র কোনো দেশই প্রকাশ করেনি। চীন সফরকালে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দোল্লাহিয়ান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে তার প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির একটি চিঠি হন্তান্তর করেছেন। এতে রইসি প্রশাসন থেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা আছে বলে জানানো হয়েছে। তবে কি সে বিষয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি হোসেইন আমিরাব্দোল্লাহিয়ান। তবে রইসি প্রশাসন বার বার ‘এশিয়াকেন্দ্রিক’ পররাষ্ট্রনীতির ওপর জোর দিয়েছে। এতে চীন রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে। জিনিয়াংসু, উয়াক্সিতে অনেক বৈঠকের মধ্যে এই সফরে এসেছেন ইরানি মন্ত্রী। সেখানে গালফ কো-অপারেটিভ কাউন্সিলের (জিসিসি) সেক্রেটারি জেনারেল, এর চারটি সদস্য দেশ সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার সামান্য পরে সেখানে অবতরণ করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওদিকে ২০১৫ সালে সম্পাদিত ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বহালের বিষয়ে ভিয়েনাতে অব্যাহত আলোচনা চলছে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে। সেই মিটিং সম্পর্কে হোসেইন আমিরাব্দোল্লাহিয়ান বলেছেন, অল্প সময়ের মধ্যেই অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে ওই চুক্তিটি অর্জন করতে প্রস্তুত ইরান। এক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়ার সমর্থন বিষয়টিকে সম্ভব করে তুলবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’কে উদ্ধৃত করে ওই বৈঠক সম্পর্কে ইরানি মিডিয়ায় বলা হয়েছে, ভিয়েনা আলোচনায় ইরানকে লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে চীন। তিনি বলেছেন, আমরা আশা করছি, পশ্চিমা দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে ভিয়েনায় ওই চুক্তিটি সক্রিয় করতে সম্মত হবে। এ সময় তিনি পশ্চিমা দেশগুলোÑ যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি এবং বৃটেনের সমালোচনা করেন। বলেন, আলোচনায় তাদের উদ্যোগের অভাব আছে। তারা বলেছে, আমরা উদ্বিগ্ন এবং আমরা তাড়াহুড়ো করছি। কিন্তু তাদের কার্যকর উদ্যোগ থেকেই দেখা যায়, তাদের কাজ এবং কথার মধ্যে মিল নেই।