উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ বাজার রংপুর সিটি বাজারের ব্যবসায়ীরা ৫ দফা দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা বাজার বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছে। গতকাল সকালে বাজারের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর ধরে অবহেলিত এ বাজারটির উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, প্রবেশ গেট ও শৌচাগার নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, পার্কিং ব্যবস্থাসহ ৫ দফা দাবি সিটি করপোরেশনের কাছে জানিয়ে আসলেও কর্তৃপক্ষ বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা বাজার থেকে আয় করেও উন্নয়নে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে করে প্রতিদিন এ বাজারে আসা লাখ লাখ ক্রেতা-বিক্রেতা ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অবিলম্বে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন ছোট বাবু বলেন, সিটি বাজার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার হলেও এর কোনো উন্নয়ন করেনি সিটি কর্তৃপক্ষ। এ বাজারে শৌচাগার ও ফটক নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পার্কিং জোন তৈরির জন্য আমরা তাদেরকে লিখিত ও মৌখিকভাবে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু মেয়র আশ্বাস দিয়ে কথা রাখেননি। আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধান ফটক ও শৌচাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েও মাঝপথে কাজ থামিয়ে দিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।
আমাদের এ বাজার থেকে সিটি করপোরেশন বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকা আয় করে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ অর্থের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বাজারের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। তাই আমরা ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিটি বাজারের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপরেও দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি আমার কাছে শৌচাগারের দাবি করেছিল, সেটির কাজ চলমান রয়েছে। মাছ বাজারের টিনশেডটি ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। সিটি বাজারের বামদিকে ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। বাজারের ৫টি কেচি গেট পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ছাড়া মাছ ও মাংস হাটটি ভেঙে ফেলে ৫ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের এডিবি প্রকল্পে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। সিটি বাজার ব্যবসায়ীরা মান্ধাতা আমলের ভাড়া ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ১২৮ টাকা সিটি কর্তৃপক্ষকে প্রদান করছে। অথচ এখন প্রত্যেকটি দোকানের ভাড়া ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা সমিতি আদায় করছে। সিটি বাজারের উন্নয়ন কাজ চলমান থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ী সমিতি আমার সঙ্গে কোনো কথা না বলেই তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।