ঢাকায় পরিবহন শ্রমিকদের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। গতকাল সকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এদিনে মহাখালী বাস টার্মিনালে ভিড়
করেছেন বাসের চালক-শ্রমিকরা। তবে কার্যক্রম শুরু হতে না হতেই মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে গেছে টিকা। শ্রমিক নেতারা জানান, এদিন মহাখালী বাস টার্মিনালে একশ’ জন শ্রমিককে টিকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু টিকা দেয়ার খবর শুনে সেখানে অনেক পরিবহন শ্রমিক ভিড় করেন। পরে তাদের জন্য আরও একশ’ ডোজ টিকার ব্যবস্থা করা হয়। যেসব শ্রমিক বুধবার টিকা পাননি, অনুমোদিত টিকা কেন্দ্র অথবা হাসপাতালে গেলে আলাদা ব্যবস্থাপনায় তাদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আগে থেকে না জানায় পরিবহন শ্রমিকেরা দূরপাল্লায় গাড়ি পরিবহনে চলে যাওয়াতে প্রথম দিন টার্গেট প্রায় এক হাজার শ্রমিক-চালকদের টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাসস্ট্যান্ডগুলোতে টিকাদানের যথাযথ পরিবেশ না থাকায় প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডের নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শ্রমিকদের জন্য বিশেষ অগ্রাধিকারে টিকা দেয়া হবে। পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, দিন চুক্তিতে কর্মরত শ্রমিকদের বেশির ভাগ দূরপাল্লার পরিবহনে চলে যাওয়ায় উপস্থিতি ছিল কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও প্রায় শতাধিক শ্রমিক টিকা নিতে আসেন টিকাদানের জন্য নির্দিষ্ট ভেন্যুতে। উপস্থিতি কম দেখে প্রথম শতাধিক শ্রমিকদের টিকা প্রয়োগের পর প্রায় বন্ধ হয়ে যায় টিকাদান কার্যক্রম। পরে শ্রমিকদের উপস্থিতি দেখে আরও শতাধিক টিকা আনা হয় পাশের ডিপো থেকে। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে সরকার ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, গণপরিবহন ও হোটেল-রেস্তরাঁয় সেবাপ্রার্থীদের টিকা সনদ নিয়ে যেতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত গণপরিবহনের কতো শতাংশ কর্মী টিকা নিয়েছেন, সেই পরিসংখ্যানই সংশ্লিষ্টদের কাছে নেই। এ অবস্থায় এই খাতের যারা টিকা নেননি, তাদের অগ্রাধিকারের আওতায় এনে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, আজ থেকে (গতকাল) পরিবহন শ্রমিকদের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই সবাইকে আমরা টিকার আওতায় আনবো। আমরা এ পর্যন্ত ৯০০ জনের তালিকা পেয়েছি। আমাদের টিকার কোনো সংকট নেই। এদিকে শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতে, সড়ক পরিবহন খাতে শ্রমিক প্রায় ৫০ লাখ। এর সঙ্গে যানবাহন মেরামতসহ নানা কাজে যুক্ত শ্রমিক আছেন আরও প্রায় ২০ লাখ। সব মিলিয়ে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, নছিমন, করিমনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। এর মধ্যে শুধু যাত্রীবাহী বাসের শ্রমিকের সংখ্যা ১০ লাখের মতো।