বাংলারজমিন

বিষাক্ত সিসায় মরছে গরু

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

২০২২-০১-২১

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের চান্দপুর পূর্বপাড়া ও মদিনাছপাড়া গ্রামে এক মাসে কৃষকের ৩০টি গরু মরে গেছে। অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখে রয়েছে বহু গরু। অনেক দরিদ্র কৃষকের একাধিক গরু মরে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এখনো উপযুক্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় বাড়ছে আতঙ্ক। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার চান্দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের শফিক মিয়ার একটি নয় মাসের গর্ভবতী গাভী মরে যায়। একই দিন মোশারফ মিয়ার ১টি গরু মরে যায় এবং আরও ৩টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাছাড়া গত এক মাসে চান্দপুর পূর্বপাড়া ও মদিনাছপাড়া গ্রামের জজ মিয়ার ৩টি, রমজান মিয়ার ২টি, মোস্তফার ২টি, আব্দুল হাইয়ের ২টি, স্বপন মিয়ার ২টি, আবুল হোসেন, মাসুদ মিয়া, বাক্কার মিয়া, রতন মিয়া, গোলাপ মিয়া, মনির মিয়া, আব্দুল আজিজ, ইয়াছিন মিয়া, আলম, শাহীন, করিম, আসাদ, হারুন, সাদ্দাম, তাহের, লিটনের ১টি করে গরু মারা যায়। এ ছাড়া এলাকার অনেক কৃষকের গরু অসুস্থ আছে এবং প্রতিদিনই নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে ১লা জানুয়ারি থেকে ১৮ই জানুয়ারি পর্যন্ত বিষক্রিয়ায় ১৭টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
তবে এলাকাবাসী জানান, এক মাসে অন্তত ৩০টি গরু মারা গেছে। এদিকে অজ্ঞাত রোগে গরু মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও হাসপাতালের ডা. জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ৩ সদস্য ও কটিয়াদী উপজেলা ভ্যাটেরিনারি সার্জন ডা. নাছির উদ্দিন মুন্সির নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মৃত ও আক্রান্ত গরুর নমুনা সংগ্রহ করে গত ৪ঠা জানুয়ারি পরীক্ষার জন্য চিফ সায়েন্টিফিক অফিসারের কার্যালয়, ঢাকায় প্রেরণ করেছেন। গত ১০ই জানুয়ারি চিফ সায়েন্টিফিক অফিসারের কার্যালয় ল্যাব-এর রিপোর্টে উক্ত এলাকার খড় ও পানিতে অতিমাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আক্রান্ত এলাকায় জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প-কারখানা এলাকা এবং এর আশপাশের পরিবেশে উৎপাদিত/প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গো-খাদ্য ও পানি পরিহার এবং গবাদিপশুর মাঝে বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এলাকার  মোস্তফা কামাল নান্দু জানান, গরিব কৃষক ২-৩টি গাভী লালনপালন করে তাদের সংসার চালাতো। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের গরুগুলো মরে যাওয়ায় আয়  রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের দাবি জানাই।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওসমান গণি জানান, অজ্ঞাত রোগে গরু মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং মৃত ও অসুস্থ গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা চিফ সায়েন্টিফিক অফিসারের কার্যালয় ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পাঠাই। ল্যাব রিপোর্টে দেখা যায় আক্রান্ত এলাকায় খড় এবং পানিতে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়। যে কারণে গরু মৃত্যুর সংখ্যা ও অসুস্থ হয়ে পড়ার সংখ্যা বাড়ছে। তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, অতিমাত্রার সিসা মানবদেহেও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status