× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপ্তি / ক্ষমতা বাড়াতে ডিসিদের একগুচ্ছ প্রস্তাব

প্রথম পাতা

সিরাজুস সালেকিন
২১ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার

নিজেদের ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ প্রশাসন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারকে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। গতকাল ঢাকায় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন শেষ হয়েছে। এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের আগেই রীতি অনুযায়ী প্রায় ২৬৩টি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসকরা। সম্মেলন চলাকালীন এসব প্রস্তাবের ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কিছু প্রস্তাব সরকার গ্রহণ করেছে। কিছু যাচাই-বাছাই চলছে। আবার কিছু প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করা হয়েছে। সম্মেলনের প্রথম দিনে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বহুতল ভবন করার প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)।
ডিসিদের এ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নাকচ করে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ডিসিরা বহুতল ভবন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। বহুতল ভবন হলে সেটা স্থায়ী হবে। তবে বহুতল ভবন করতে অনেক টাকা প্রয়োজন। এতে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রত্যাশা, মুজিববর্ষে কেউ ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না। সেই প্রত্যাশা বাস্তবায়নের জন্য এটা করার সুযোগ নেই। মুখ্য সচিব বলেন, ডিসিরা আরও কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছেন, যেগুলো বাস্তব তা গ্রহণ করা হবে। যেগুলো বাস্তবসম্মত নয়, সেগুলো তাদের বুঝিয়ে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রীও কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম দিনে উন্নয়ন প্রকল্প তদারকিতে জেলা পর্যায়ে কমিটি চেয়েছিল ডিসিরা। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান তা নাকচ করে দেন।  মন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকরা জেলা পর্যায়ে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ক্ষমতা বা নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে বলেছেন। কিন্তু আমরা তাতে সম্মতি দেইনি। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী অলরেডি জেলা প্রশাসকদের সে ক্ষমতা রয়েছে। তারা যেকোনো সময় যেকোনো প্রকল্পের খোঁজখবর নিতে পারেন।
ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়ার প্রস্তাব আসে ডিসিদের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্ত্রণালয়ের অভিমত জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, ডিসি সম্মেলনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণের প্রস্তাব ওঠার পর তাতে সায় দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। দেশের তিনটি বিভাগে সরকারি কর্মচারীদের জন্য হাসপাতাল স্থাপনে ডিসিদের কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছে। এ প্রস্তাবেও সম্মতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের কাছে ডিসিরা প্রস্তাব রেখেছিলেন, সব নৌযানকে লাইসেন্স দেয়া যায় কি-না। এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, এখন সব নৌযান বলতে কিন্তু ছোট ছোট নৌযানও আছে। তাদের লাইসেন্স দেয়ার বিধান নেই। আমাদের মৎস্য আইন রয়েছে, সমুদ্র আইন রয়েছে। আইনের বাইরে গিয়ে আমরা কিছু করবো না। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য জেলা প্রশাসকরা এককালীন অর্থ বরাদ্দ চাইলে তা নাকচ করে দিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, আলোচনার সময় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে এককালীন অর্থ বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসকরা প্রস্তাব দেন। আমরা সেখানে দ্বিমত পোষণ করেছি। আমরা বলেছি, দুই বা তিন কিস্তিতে দিলে কাজের গতি ঠিক থাকে। কাজের মনিটরিং ভালো হয়, কাজের ফলাফল ভালো হয়।
এ ছাড়া সম্মেলনে নিজেদের ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ বেশকিছু প্রস্তাব এনেছে ডিসিরা। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকারের পক্ষ থেকে বৈধ লাইসেন্স দেয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মতামত নেয়ার বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন একজন জেলা প্রশাসক। মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর অধীনে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ২২৮ ধারা অন্তর্ভুক্তের প্রস্তাব এসেছে ডিসি সম্মেলনে। দণ্ডবিধির এ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো বিচার বিভাগীয় কার্যক্রমের যেকোনো পর্যায়ে নিয়োজিত থাকাকালে কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে অপমান করে বা তার কাজে বাধা প্রদান করে, তবে সে ব্যক্তি ছয় মাস পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত যেকোনো পরিমাণ অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।’
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মচারীদের বদলির ক্ষমতা যথাক্রমে বিভাগীয় কমিশন ও ডিসি অফিসকে দেয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। এসএমই ও ক্ষুদ্রঋণ সমন্বয়ে ডিসির নেতৃত্বে কমিটি চান তারা।  ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে- এমন নিয়মও চান ডিসিরা। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে ডিসিদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি এসেছে সম্মেলনে। সরকার অনুমোদিত ‘ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি’গুলোর সমন্বয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে চান তারা। জেলা প্রশাসকের জন্য স্বেচ্ছাধীন তহবিলে যৌক্তিক বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন কয়েকটি জেলার ডিসি। পার্বত্য জেলার সব সরকারি কর্মচারীর মূল বেতনের ৩০ শতাংশের (শর্তহীন) বেশি ভাতা হিসেবে দেয়ার প্রস্তাব করেছেন ওই অঞ্চলের এক ডিসি। চাকরিরত অবস্থায় সরকারি কর্মচারী মৃত্যুবরণ করলে তাদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাভাতা চালুর প্রস্তাব এসেছে সম্মেলনে। উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব প্রণয়নকালে প্রকল্পের পরিবেশ, জমির শ্রেণি ও তার ব্যবহারে জেলা প্রশাসক ও জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মতামত গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন একজন ডিসি। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি রোধ ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগের ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগে পুল গঠনের প্রস্তাব এসেছে ডিসি সম্মেলনে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
Mahbub
২০ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৮:৪১

আমলারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন, সরকারে থাকা জনগণ দ্বারা নির্বাচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তথা মন্ত্রী মহোদয়গন বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করবেন এমন জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে অর্থের অপচয় না করে আমলাদের হাতেই রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া হোক, অথর্ব রাজনীতিবিদদের কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা।

অন্যান্য খবর