জয়পুরহাট উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাঁচবিবি রেল স্টেশনে বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটের অপ্রতুল বরাদ্দ ও টিকিট বিক্রয়ে কম্পিউটার ব্যবস্থা না থাকায় হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রী সাধারণ। যাত্রীদের চাহিদামতো টিকিট দিতে না পারার কারণে স্টেশনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটছে। এছাড়া খুলনা যাতায়াতকারী রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস এবং ঢাকা যাতায়াতকারী নীলসাগর ও কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি না থাকার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় যাত্রীরা। সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য রেলের ঊর্ধ্বতন বিভাগে একাধিকবার অবহিত করা হলেও আজও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিলাহাটি থেকে রাজশাহী যাতায়াতকারী তিতুমীর ট্রেনের পাঁচবিবির যাত্রীদের জন্য রাজশাহীর ৯টি সিট বরাদ্দ রয়েছে। মাঝের কোনো স্টেশনের জন্য সিট নেই। এই ট্রেনে চিলাহাটির সিট রয়েছে ৫টি। বরেন্দ্র আন্তঃনগর ট্রেনের রাজশাহীতে ৯টি, নাটোরের ৫টি এবং সান্তাহারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১০টি সিট। যা প্রয়োজনের তুলনায় কম।
ট্রেন দুটির যাত্রীরা পর্যাপ্ত টিকিট না পাওয়ায় উভয় দিকের প্রায়দিনই অর্ধশতাধিক যাত্রী বিনা টিকিটে বা বিশেষ ব্যবস্থায় ভ্রমণ করছেন বলে একটি সূত্র জানায়। ঢাকা অভিমুখী একতা আন্তঃনগর ট্রেনের ঢাকার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২৭টি এবং পঞ্চগড় অভিমুখী একই ট্রেনের দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ের জন্য রয়েছে ২০টি সিট। ঢাকা অভিমুখী দ্রুতযান আন্তঃনগরে ১৮টি ও পঞ্চগড়, দিনাজপুরের জন্য রয়েছে মাত্র ১০টি সিট। আবার রাজশাহী যাতায়াতকারী বাংলাবান্ধা আন্তঃনগর ট্রেনটি পাঁচবিবি রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকলেও বেশ কিছুদিন থেকে যাত্রীদের টিকিট দিচ্ছে না স্টেশন মাস্টার। কারণ হিসাবে জানা যায়, শুধুমাত্র সান্তাহারের জন্য ৫টি সিটের টিকিট বিক্রি হলেও বগি বিকল থাকার কারণে রাজশাহীর টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
পাঁচবিবি রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতীকারী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় পাঁচবিবি, দিনাজপুর জেলার হিলি-ঘোড়াঘাট ও গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জসহ বেশকিছু এলাকার যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। অনেক যাত্রীদের পার্শ্ববর্তী স্টেশন থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এ রেল স্টেশনে ৫টি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি থাকলেও কম্পিউটারাইজ পদ্ধতিতে টিকিটের কোনো ব্যবস্থা আজও চালু না হওয়ায় একাধিক যাত্রীর কাছে একই সিটের টিকিট বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও অধিক মূল্যে বাইরে থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে।
পাঁচবিবি রেল স্টেশনের মাস্টার আব্দুল আউওয়াল হোসেন বলেন, কম্পিউটার সিস্টেম চালু না হওয়ায় মাসে দু’একটি টিকিটের সমস্যা ঘটছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের চিফ কমার্সিয়াল ম্যানেজার মো. আহসান উল্লাহ ভূঁইয়া জানান, নতুন বগি (কোচ) সংযোজন করা সম্ভব না হওয়ার কারণে আপাতত সিট বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য উপরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই অনলাইন টিকিটের জন্য পাঁচবিবি রেল স্টেশনে কম্পিউটার সরবরাহ করা হবে। বাংলাবান্ধা আন্তঃনগন ট্রেনের বগি মেরামতের কাজ চলায় পাঁচবিবি রেল স্টেশনের টিকিট বিক্রি বন্ধ রয়েছে।