জাপানে করোনার ৬ষ্ঠ ঢেউ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার টোকিওসহ মোট ১৩টি প্রিফেকচারে তিন সপ্তাহের আধা-রাজ্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। প্রিফেকচারগুলোর গভর্নরদের অনুরোধে এবং এডভাইজরি কাউন্সিলের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘোষণা দেয়। অন্যান্য প্রিফেকচারগুলো হচ্ছেÑ গুনমা, সাইতামা, কানাগাওয়া, চিবা, নিগাতা, আইচি, গিফু, মিত্র, কাগাওয়া, নাগাসাকি, কুমামোতো এবং মিয়াজাকি।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জাপান সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উপদেষ্টা প্যানেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানালে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা তা অনুমোদন দেন ।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ওমিক্রন মহামারির রেশ জাপানে ৬ষ্ঠবারের মতো বিস্তার লাভের প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ২১শে জানুয়ারি শুক্রবার থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি রোববার পর্যন্ত এই আধা-রাজ্য জরুরি অবস্থা বলবত থাকবে।
প্রিফেকচারগুলোর রাজ্য সরকারের অনুরোধে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী দাইশিরো ইয়ামাগিওয়া গত বুধবার বিশেষজ্ঞ প্যানেলকে অবহিত করলে প্যানেল তা অনুমোদন দেয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আধা-রাজ্য জরুরি অবস্থা জারি করে। এর ফলে রাজ্য বা প্রিফেকচারগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থা নিতে পারবে ।
এর আগে ওকিনাওয়া, হিরোশিমা এবং ইয়ামাগুচি প্রিফেকচারে একই ব্যবস্থা চালু রয়েছে যা আগামী ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এবং এই নিয়ে মোট ১৬টি প্রিফেকচারে আধা-রাজ্য জরুরি অবস্থা জারি করা হলো জাপানে।
ঘোষণায় রেস্তোরাঁগুলো রাত ন’টার মধ্যে বন্ধ করা এবং কারাওকে ও অ্যালকোহল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার কথা হয়েছে। এছাড়াও স্পোর্টস, বিনোদনের জন্য যেকোনো ধরনের ইভেন্ট বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানানো সহ বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা এবং অপ্রয়োজনে বাহির না হয়ে ঘরে থাকার জন্য জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান বিশেষজ্ঞ প্যানেল
তিনি বলেন, প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় জাপান স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে, অহেতুক বাইরে সময় দেয়া, জনসংযোগ করা, অহেতুক ভিড় সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে হবে সবাইকে ।
সংশ্লিষ্ট এলাকা সমূহের স্থানীয় সরকার তাঁর এলাকার বসবাসকারীদের অকারণ বাইরে যাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবে এবং করোনাভাইরাস যাতে আর না ছড়ায় সে ব্যাপারে এলাকবাসীকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসার কথা বলতে পারবে।
অনুরোধ করা হবে নিজ নিজ প্রিফেকচারের সীমানা অতিক্রম না করতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীর সংখ্যা ও শনাক্তের হার প্রতিদিন বাড়ছে। আরও বাড়বে একথা ঠিক তবে সেই হারে মৃত্যুর আশঙ্কা নেই। গুরুতর অসুস্থ রোগী ও মৃতের সংখ্যা ডেল্টার চেয়ে কম হবে।
যদিও কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণকে হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়। ওমিক্রনে সংক্রমিত প্রচুর রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে এবং কেউ কেউ মারা যাচ্ছে। কাজেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন; নিজে বাঁচুন, অপরকে বাঁচতে দিন।
একদিনে জাপানব্যাপী করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪০,০০০ এর উপরে এবং টোকিওতে ৭,৩৭৭ জন।