চাঞ্চল্যকর চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রায়মা ইসলাম শিমু হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ দ্বিতীয়বার সংবাদ সম্মেলন করেছে গতকাল কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ দক্ষিণ) মো. হুমায়ন কবীর। তিনি বলেন, শিমু হত্যার আসামি শাখাওয়াত আলীম নোবেল (৪৮) ও তার বাল্যবন্ধু এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ (৪৭) বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ওই জবানবন্দি থেকে জানা যায়, নোবেলের বাল্যবন্ধু ফরহাদ প্রায়ই কলাবাগান এলাকায় তার বাসায় আসা-যাওয়া করতো। এরই সূত্রধরে গত ১৬ই জানুয়ারি সকাল ১০টায় বন্ধু ফরহাদ তাদের কলাবাগান বাসায় আসে। এ সময় নোবেল তার স্ত্রী শিমুকে চা বানাতে বলে। চা দিতে দেরি হওয়ায় নোবেল কিচেনে ঢুকে দেখতে পায় শিমু মোবাইল ফোন দেখছে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমূল ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে নোবেল তার বন্ধুকে সহায়তা করার জন্য বলে।
এতে দু’জনে মিলে শিমুর গলাটিপে ধরলে ঘটনাস্থলেই শিমু মারা যায়। এ সময় ফরহাদ একটি বস্তায় শিমুর লাশ ভরে বস্তাটি সেলাই করে। পরে বাড়ির গেটের দারোয়ানকে নাস্তা আনার কথা বলে অন্যত্র পাঠিয়ে শিমুর বস্তাবন্দি লাশটি তারা গাড়ির পেছনে রাখে। নোবেল ও ফরহাদ লাশ নিয়ে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় গুম করার জন্য সুযোগ খুঁজছিল। সুযোগ না পেয়ে লাশটি নিয়ে সন্ধ্যায় তারা আবার বাসায় ফিরে আসে। ওইদিন রাতে আবার লাশটি নিয়ে তারা বছিলা সেতু দিয়ে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর এলাকায় আসে। এ সময় সুযোগ বুঝে তারা আলীপুর ব্রিজের অদূরে একটি রাস্তার পাশে লাশটি ফেলে পালিয়ে যায়। ১৭ই জানুয়ারি সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ অজ্ঞাত হিসেবে শিমুর লাশ উদ্ধার করে। পরে ঢাকা জেলা পিবিআই’র সহায়তায় অভিনেত্রী শিমুর লাশটি শনাক্ত করেন মডেল থানা পুলিশ। শিমুর লাশ বহনকারী গাড়িতে থাকা একটি সুতার বান্ডিল উদ্ধার করে পুলিশ। এই সুতার সঙ্গে শিমুর লাশ রাখা বস্তার সেলাইয়ের সঙ্গে মিল দেখে পুলিশের সন্দেহ হলে শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বন্ধুকে ১৭ই জানুয়ারি রাতে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নোবেল ও ফরহাদ পুলিশের কাছে কিছু উল্টাপাল্টা তথ্য দেয়। ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে আদালতে পাঠালে সেখানে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেল সাহাবুদ্দীন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল অফিসার ইনচার্জ আবু ছালাম মিয়া প্রমুখ।