ইয়েমেনের একটি কারাগারে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, হুতি বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি সা’দায় ওই জেলখানায় শুক্রবার বিমান হামলা চালানো হয়। এতে প্রকৃতপক্ষে কতজন হতাহত হয়েছেন তা পরিষ্কার নয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধারকর্মীরা মৃতদেহ টেনে তুলছিলেন। কাউকে এর নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করার আশা ক্ষীণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি আন্না ফস্টার।
সেখানে উত্তেজনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। শুক্রবারের ওই হামলার তদন্তও দাবি করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট।
এই যুদ্ধের ফলে কমপক্ষে ১০ হাজার শিশু সহ হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত বা আহত হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ হয়েছেন বাস্তুচ্যুত। বেশির ভাগ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
হুতি পরিচালিত টেলিভিশনে ঘটনাস্থলের ছবি দেখানো হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে খালি হাতে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন লোকজন। স্থানীয় হাসপাতাল ভরে গেছে আহত মানুষে। এমএসএফ বলেছে, শুধু একটি হাসপাতালেই আছেন কমপক্ষে ২০০ মানুষ। ইয়েমেনে এমএসএফের প্রধান আহমেদ মাহাত বলেছেন, বিমান হামলার ঘটনাস্থলে এখনও অনেক মৃতদেহ আছে। কারণ, বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। প্রকৃতপক্ষে কত মানুষ মারা গেছেন তার প্রকৃত সংখ্যা বলা অসম্ভব। এটা একটা সহিংসতার ভয়াবহ রূপ।
একই ঘটনায় উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। ঘটনাস্থলের কিছুটা দক্ষিণে বিমান হামলায় নিহত হয়েছে তিনটি শিশু। এ সময় তারা বিদ্রোহীদের শহর হুদাইদাহ’তে ফুটবল খেলছিল। এ তথ্য দিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন। ঘটনার সময় দেশজুড়ে প্রায় সব জায়গায় ইন্টারনেট ছিল বিচ্ছিন্ন। হুতি মিডিয়া এ জন্য টেলিযোগাযোগ বিষয়ক স্থাপনায় হামলাকে দায়ী করেছে।
ওদিকে হুদাইদাহ’তে বিমান হামলার কথা নিশ্চিত করেছে সৌদি আরব। তবে সা’দায় কারাগারে হামলার কথা তারা উল্লেখ করেনি। সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে হুতিরা, যা একটি বিরল ঘটনা। ওই হামলায় কমপক্ষে তিন জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এরপরই জোটবাহিনী হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা জোরালো করেছে।