× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সেতুটি বদলে দিয়েছে বিশ গ্রাম

বাংলারজমিন

নুরুল কবির, বান্দরবান থেকে
২৫ জানুয়ারি ২০২২, মঙ্গলবার

গ্রামে সেতু নির্মাণ হয়েছে। চলছে সড়ক তৈরির প্রাথমিক কর্মযজ্ঞ। স্বাধীনতার পর পরিবর্তনের এই ধারায় মহাখুশি রূপসীপাড়া ও লামা সদরের হাজার হাজার মানুষ। এখন দাবি একটাই, সেতুর পর সেই পুরনো মাটির রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হোক। স্থানীয়দের মতে, চলমান এসব কাজ সম্পূর্ণ হলে লামা সদর ও রুপসীপাড়া দুই ইউনিয়নের অন্তত ৯টি ওয়ার্ডের যোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে।
বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পর থেকে নেই কোনো যান চলাচল। সেই পুরনো মাটির রাস্তা ব্যবহার করে দৈনন্দিন কাজ করতে হয় পাহাড়পাড়া, মেওয়াচর, বলিয়ারচর, চিউনি, বরিশাল পাড়া, এমশনপাড়া, পাউপাড়া, লক্ষণঝিরি পাড়া, পানচি পাড়া, নতুন লাইল্লাপাড়া, হেডম্যানপাড়া, ঘিলাপাড়াসহ অন্তত বিশ গ্রামের মানুষকে।
কৃষি ও তামাক নির্ভর এসব গ্রামের মানুষকে তাদের উৎপাদিত পণ্য নৌকা দিয়ে নিতে হতো বাজারে। স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলে আসছিল ২০ হাজার মানুষের জীবন যাত্রা।
কিন্তু সম্প্রতি দুই পাড়ের মানুষের অবিশ্বাস্য স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলছে। রুপসীপাড়া পোপা খালের উপর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত ৬০.০০ মিটার সেতু এখন দৃশ্যমান। চলছে ওপারের অ্যাপ্রোচ সড়কসহ বাকি সড়কের প্রাথমিক কার্যক্রম। সম্প্রতি সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, লামা সদর ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ড এবং রুপসীপাড়ার ৪টি ওয়ার্ডের মানুষের চলাচল সুবিধার্থে পোপা খালের উপর ব্রিজের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সড়কের সঙ্গে যুক্ত করতে চলছে অ্যাপ্রোচের কাজ।
এ সময় কথা হলে মেউলাচর এলাকার কৃষক তৌহিদুল ইসলাম, অংহ্লাপাড়া এলাকার মাহাবুবুল আলম এই প্রতিবেদককে জানান, শুষ্ক মৌসুম আসলে তাদের গ্রামগুলোতে আনন্দ দেখা দেয়। কারণ বর্ষা মৌসুমে নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ। স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা।
লামা মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী তাহমিনা আক্তার ও বইক্কুমঝিরি এলাকার গৃহিণী স্বপ্না বেগম জানান, ‘অবহেলিত আমাদের এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড নতুন ব্রিজ করেছে। সড়ক করবে এমন সংবাদ যেন এলাকার মানুষের মাঝে ঈদের আনন্দের মতো ছড়িয়ে পড়েছে।’
বইল্লারচর এলাকার পান ব্যবসায়ী আবদু সাত্তার জানান, বহুকাল ধরে তিনি নৌকায় নদী পার হয়ে এসব গ্রামে ব্যবসা করেন। তার মতো অনেক ব্যবসায়ী ও কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি, তামাক, গাছ-গাছালিসহ বিভিন্ন পণ্য নৌকায় করে পরিবহন করতো। এখন নতুন ব্রিজ হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ কমে গেছে।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মারমা বলেন, লামা সদর ইউনিয়নের সঙ্গে রুপসীপাড়া ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে পোপা খালের উপর নির্মিত উন্নয়ন বোর্ডের ব্রিজ। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কল্যাণে বদলে যাবে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে ব্রিজ না থাকায় মানুষ পিছিয়ে ছিল।
তিনি আরও বলেন, বান্দরবানের আনাচে- কানাচে, কোথায় কি লাগবে তার প্রয়োজনীয়তা মানুষ না বলার আগেই বুঝতে পারেন পার্বত্যমন্ত্রী। সেই ধারাবাহিকতায় রুপসীপাড়া পোপা খালে ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণে পার্বত্যমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্টদের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট নির্বাহী প্রকৌশলী ইয়াছির আরাফাত জানান, মানুষের জনভোগান্তি দূর করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়কমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০১৯ সালে ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজের কাজ শুরু করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। ২০২২ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যেই পুরো ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে। এখন অ্যাপ্রোস সড়কের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই বাকি সড়কের কাজও শুরু হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর