সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নসহ অন্যান্য ইউনিয়নে মাদকের বিস্তৃতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানরা। বিশেষ করে সরাইল সদর, শাহবাজপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নে মাদকের ক্রয়-বিক্রয় ও আসক্তি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বক্তারা। গত সোমবার নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম আইনশৃঙ্খলা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ ও রোকেয়া বেগমসহ নবনির্বাচিত ৯ জন ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতেই ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল বলেন, বিভিন্ন কারণে শাহবাজপুর এখন মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এখনই লাগাম টেনে না ধরলে এর ভয়াবহতা চরম আকার ধারণ করবে। করোনা থেকে বাঁচতে আমরা বিধিনিষেধ মানছি। কিন্তু শাহবাজপুরে মাদকের বিস্তৃতি এখন করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর।
সেখানকার মাদক বিক্রয় সেবন নিয়ন্ত্রণে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ বলেন, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন রোডকে মাদক পাচারের নিরাপদ জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন গ্রামে মাদকের বিস্তৃতি ঘটেছে। আনাচে কানাচে হেঁটে হেঁটে মাদক বিক্রয় করছে। নতুন প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জব্বার বলেন, জীবন ধ্বংসকারী মাদকের সঙ্গে কোনো আপোষ নেই। এখানকার মাদক নিয়ন্ত্রণে যেকোনো কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে আমি প্রস্তুত। সড়কের যানজট মুক্ত করতে জনস্বার্থে কাজ করতে আমার কোনো অনীহা নেই। পাকশিমুল, পানিশ্বরসহ অন্যান্য চেয়ারম্যানরাও মাদকের দ্রুত বিস্তৃতিতে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। পিডিবি’র ভৌতিক বিল ও মিটার বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোসা. আছমা বেগম। তবে গুরুত্বপূর্ণ এ সভায় সরাইল পিডিবি ও থানার কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির পাশাপাশি কালীকচ্ছের মাদক উৎপাদনের কারখানাটি (বাংলা মদ) বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান সরাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান। সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও বলেন, চেয়ারম্যানরা প্রত্যেক ইউনিয়নের সকল কর্মকাণ্ড তদারকি করবেন। ভালোমন্দ দুটোর ফলাফলই আপনাদের। আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করুন। মাদক একেবারে বন্ধ করা অসম্ভব। তবে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেক চেয়ারম্যান ও দায়িত্বশীল লোকদের কাজ করতে হবে। আপনারা জটিল কোনো সমস্যায় পড়লে প্রশাসনের সহায়তা চাইবেন। মাদক নিয়ন্ত্রণে এর কুফলগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।