পূর্বাচলে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৬তম আসরের শেষ মুহূর্তে বেড়েছে লোক সমাগম। বেড়েছে বেচাকেনা। মেলার ২৫তম দিন গতকাল সকাল থেকে রাত অবধি দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। কোভিড ১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ১১ দফা স্বাস্থ্যবিধি জারির পর মেলায় দর্শনার্থীদের প্রবেশপথে স্বাস্থ্য সচেতনতার কড়াকড়ি নিয়ম পালন করলেও ভেতরে ঢোকার পর সেটা আর তেমন দেখা যায়নি। যদিও মেলা কর্তৃপক্ষ মাস্ক পরাতে বাধ্য করতে কঠোর ভূমিকা নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে চালাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মেলার ২৫তম দিনে গতকাল ঘুরে দেখা যায়, মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন ছাড়াও অস্থায়ী স্টলে বসেছে বিভিন্ন নামীয় কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য। তবে মেলায় ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে যুমনা, বেঙ্গল, আরএফএল, ওয়ালটন, বেক্সি ফেব্রিক্সসহ বিভিন্ন কোম্পানি ইতিমধ্যে বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছেন। অনেকে তাদের পণ্য বিক্রি বাড়াতে হোম ডেলিভারি সার্ভিস ফ্রি ঘোষণা করায় আগের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট স্টল পরিচালকদের।
অপরদিকে বিভিন্ন খাবারের দোকানে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। মিঠাই খাবারের দোকানদার আরিফ বলেন, মেলায় প্রথম দিকে থেকে আমাদের বেচাকেনা ভালো। তবে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনার চাপ অনেক বেশি। এমা কফি শপের দোকানদার শাহনেওয়াজ বলেন, প্রতিদিন বিকাল থেতে লোকসমাগম বেশি হয়। আমরা সুলভ মূল্যে কফি বিক্রি করায় আমাদের বেচাকেনা অনেক ভালো। তবে মেলার সময় যদি কর্তৃপক্ষ বাড়ায় তবে আমরা উপকৃত হবো। মেলায় ঘুরতে আসা দাউদপুরের আশিকুল ইসলাম খোকন বলেন, আন্তর্জাতিক মানের একটি আমাদের এলাকায় হচ্ছে। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন কেনাকেটা করছেন। তবে গ্রামের লোকজন এবার এ বাণিজ্য মেলার সুবিধা ভোগ করেছে বেশি। মেলায় ঘুরতে আসা কাঞ্চন এলাকা থেকে হৃদয় চন্দ্র দাস বলেন, আগে ঢাকায় এ মেলা হতো আমরা যেতে পারতাম না। বাড়ির পাশে হওয়ায় সহজে যেতে পারছি। ইচ্ছামতো কেনাকাটাও করতে পারছি। মধুখালী থেকে আসা সুরাইয়া আফরিন মুক্তি বলেন, বাইরের খাবারের দামের চেয়ে এখানে অনেক বেশি। খাবার দাম বেশি নিলে সাধারণ দর্শনার্থীরা একদিনের বেশি মেলায় আসতে চাইবেন না। তবে অন্যান্য পণ্যের বাজার মুল্যের চেয়ে ছাড় দেয়ায় সাংসারিক টুকিটাকি পণ্য বিক্রি হচ্ছে বেশি। মেলায় ঘুরতে আসা কালিয়াকৈর থেকে আসা রিপন আহমেদ সাগর বলেন, মেলার প্রথম দিকে একবার এসেছিলাম। সে সময় তেমন কোনো অফার বা ছাড় ছিল না। আজ আবার এসে দেখলাম সব স্টলেই প্রায় বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছে। স্বাস্থ্যবিধি ভেঙেই দর্শনার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করছেন। রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নূর জাহান আরা খাতুন বলেন, মেলার অভ্যন্তরে আগত দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় সামপ্রতিক কোভিড নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে একাধিক টিম। এদের মাঝে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত প্রতিদিন একজন করে ডাক্তার, নার্স ও সহযোগী রয়েছেন। এসব বিষয়ে মেলার পরিচালক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধূরী বলেন, মেলার আশার চেয়ে বেশি দর্শনার্থী হয়েছে। এতে মেলা সফল হচ্ছে। ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই খুশি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আমাদের সব রকম আয়োজন চলছে। তবু অসচেতন দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। এতে কিছুই করার থাকে না।