বাংলারজমিন

ব্রহ্মপুত্র চরে বাদামের বাম্পার ফলন

সাওরাত হোসেন সোহেল, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে

২০২২-০১-২৬

 ব্রহ্মপুত্র কখনো কেড়ে নেয় ভিটামাটি। কখনো এর পানি ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঘরবাড়ি, দেয় দুঃখ-কষ্ট, করে নিঃস্ব। আবার এর চর কখনো দেখায় সুখের স্বপ্ন, মুখে ফোটায় হাসি। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দুঃখ-কষ্টের পর এবার ব্রহ্মপুত্রের চর কৃষকদের দেখাচ্ছে সুখের স্বপ্ন। ফুটিয়ে তুলেছে কৃষকের মুখে হাসি। ব্রহ্মপুত্রে ধু-ধু বালুচর। চিকচিক বালুকণার বুকে লতানো সবুজ গাছ। গাছের মুঠি ধরে টান দিলেই উঠে আসে থোঁকা থোঁকা বাদাম। যার রং সোনালি। যেন বালুর নিচে লুকানো মুঠোভরা সোনা। অক্লান্ত পরিশ্রমে ফলানো হয়েছে এই ফসল। এবার বালুচরে এই ফসলের হয়েছে বাম্পার ফলন। হাসি ছড়িয়ে পড়েছে কৃষকের চোখে-মুখে। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলের বালি, পলি দো-আঁশ মাটিতে এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। চিনাবাদাম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে বাদামের দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।
চিলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র নদীবেষ্টিত চর এলাকায় ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা ছড়িয়ে ১ হাজার ৪০৬ হেক্টরে ছড়িয়েছে জানান, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. জাহিদ হোসেন আনছারী। চরের বালুতে প্রতি হেক্টর জমিতে বাদাম হচ্ছে ২০-২৫ মণ। আর প্রতিমণ কাঁচা বাদাম ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এবং শুকানোর পর ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা ধানের চেয়ে অনেক লাভজনক জানান কৃষকরা। দেশের বিভিন্ন এলাকার বাদাম ব্যবসায়ীরা এখন চিলমারীর চর থেকেই বাদাম কিনছেন। এ বছর চিলমারী, নয়ারহাট, অষ্টমীর চর, পাত্রখাতা চরে বাদামের চাষ করা হয়েছে। নয়ারহাট, চিলমারী ও অষ্টমীর চরের বাদাম চাষিরা জানান, এ বছর কোনো রোগ বালাই না থাকায় বাদামের গাছ নষ্ট হয়নি। তাই আগাম জাতের চিনাবাদাম অনেক ভালো হয়েছে। দামও বেশ ভালো। তারা আরও জানায় কিছুদিন আগে এই ব্রহ্মপুত্র ভয়ঙ্কর রূপ কেড়ে নিয়েছে ভিটামাটি, ফসল, ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি আর এখন তার আরেক রূপ আমাদের দিচ্ছে সুখের হাসি। উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয় বিষান দাশ বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। এবং ধীরে ধীরে বাদাম চাষ বৃদ্ধিও পাচ্ছে। ইতিমধ্যে চিনাবাদাম তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে চরাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার কৃষক পরিবারে ফিরে এসেছে সচ্ছলতা।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status