ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার রাধাবল্লভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র মো. রনি (৬) অটোরিকশা চাপায় গুরুতর আহত হয়। দিনমজুর বাবার পক্ষে ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। গত ১৫ দিন যাবৎ শিশু মো. রনি বিনা চিকিৎসায় প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে চিৎকার করতে থাকে। অবুঝ সন্তানের অসহ্য ব্যথা আর কষ্ট সইতে না পেরে রনির বাবা মো. বিল্লাল হোসেন সাংবাদিক ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন। পরে ঘটনাটি উল্লেখ করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসহায় বাবার আর্তনাদ ও ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগাতে সমাজের বিত্তবান মানুষের সাহায্য কামনা করেন। গত সপ্তাহে রনিকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল ও পরবর্তীত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে গত রোববার রাতে ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, ঢাকা (বিডিএফ) এর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান স্কয়ার হাসপাতালের শিশু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. আফতাব ইউসুফ রাজ। এ সময় তিনি রনির চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসার সব দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন, বিডিএফ’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য-সচিব আবুল কালাম আজাদ হাওলাদার, সদস্য ইকবাল হোসেনসহ নেতারা। রনির বাবা মো. বিল্লাল হোসেন উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পেশায় সে একজন দিনমজুর। অসুস্থ রনির মা জানান, আমার ছেলে অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার পরে আমি হতাশায় ছিলাম চিকিৎসা করতে পারবো কি পারবো না। পরে ডা. রাজ ঢাকা মেডিকেলে দেখতে এসে আমার ছেলের চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার গ্রহণ করার সম্মতি দিলে আমাদের পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমি ডা. রাজের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করি। পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র জাকির হোসেন বাবুল জানান, অটোরিকশায় অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেলে রনির পরিবারে নেমে চরম হতাশা। আমরা স্থানীয়ভাবে এলাকা থেকে চাঁদা কালেকশন করে রনির প্রাথমিক চিকিৎসা করেছি। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। আমরা দৌলতখানবাসী ডা. রাজকে তার এমন মানবিক কাজের জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. আফতাব ইউসুফ রাজ জানান, এক সময় আমাদের পরিবারের নিজ ইউনিয়নও ছিল ভবানীপুর। আহত রনির পরিবারটি খুবই দরিদ্র ও অসহায়। মানবিক দিক বিবেচনা করে বিডিএফ’র পক্ষ থেকে আমি তার পাশে দাঁড়িয়েছি। রনি সুস্থ হলে তার পরিবারে স্বস্তি নেমে আসবে।