× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খানসামায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও দামে হতাশ চাষি

বাংলারজমিন

মো. রফিকুল ইসলাম, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) থেকে
২৬ জানুয়ারি ২০২২, বুধবার

গত বছর অধিক দামে আলু বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় এবার দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষকরা উৎসাহিত হয়ে দ্বিগুণ আলু চাষ করেন। কিন্তু আলুর ফলন গত মৌসুমের চেয়ে ভালো হলেও দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা। চাষাবাদে খরচ বৃদ্ধি পেলেও মাঠে কিংবা হাটে মিলছে না কাঙিক্ষত দাম। আলুর বাজারে দামে ধস নামায় চাষিদের মুখে হাসি নেই। বাজার দরে হতাশা কাজ করছে তাদের মধ্যে। তবে কৃষকরা যদি দেশীয় পদ্ধতিতে বাড়িতেই ৩-৪ মাস আলু সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন, তাহলে লাভবান হবেন বলে জানায় কৃষি বিভাগ। গত বছর চাষিরা এ সময় প্রতিকেজি আলু মাঠেই বিক্রি করেছিলেন ২০-২৫ টাকা দরে। এবার সেই আলু মাঠে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৬-৭ টাকা কেজি দরে।
অথচ উৎপাদন খরচই হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০-১২ টাকা । তার পরও মাঠে ক্রেতা নেই।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমি। কিন্তু আলু চাষ হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। আলুর ফলনও ভালো হয়েছে।
পাকেরহাটের আলু চাষি আব্দুল মজিদ বলেন, আমি এবার ৩ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। গত বছর আলুর ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছিলাম। কিন্তু এবার আলু ৬ টাকা দরে বিক্রি করতে হলো। তাও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এবারে আমি আলু চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
আরেক চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এবারে কীটনাশকের দাম অনেক বেশি ছিল। আলুর দাম অনেক কম। এতে অনেক লোকসান হবে। এক মণ আলু বিক্রি করে একটা কামলা খরচ দিতে হয়। আমরা এবার আলু চাষ করে লোকসানে পড়ে গেলাম।
ভেড়ভেড়ীর আলু চাষি মাজেদুর বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি ছিল এবং কম ফলনেও ভালো লাভ হয়। এবার ফলন বেশি হলেও লোকসান গুনতে হচ্ছে। লাভ তো দূরের কথা আসলও তুলতে পারছি না। কম দামে আলু বিক্রি করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এরপরও নগদ টাকার ক্রেতা নেই। এমতাবস্থায় সরকার যদি আলুচাষিদের দিকে না তাকায় তাহলে আমরা আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবো।
চাষিরা আরও জানান, এক বিঘা জমিতে আলু উৎপাদন করতে কমপক্ষে ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচ হয়। গড়ে এক বিঘা জমিতে ৭৫ মণ আলু উৎপাদন হয়। এই হিসাবে প্রতিকেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১০-১২ টাকা। সাধারণত মাটিতে আলু রোপণ করে একবার ফলন পাওয়া গেলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। চাষিরা এবার দু’বার আলু রোপণ করে ফলন পাচ্ছেন মাত্র একবার। আগাম আলু রোপণের কয়েকদিন পরে বর্ষার আর বৃষ্টিতে রোপণকৃত আলু মাঠেই পচে নষ্ট হয়ে যায়। লাভের আশায় সেই জমিতে পুনরায় আলু রোপণ করেন চাষিরা। সে কারণে উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পায় চাষিদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, এখন কৃষকরা আলু তুলছেন। এবার আলুর ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে দাম কম পাচ্ছেন কৃষকরা। খুচরা বাজারে আলুর যে দাম পাইকারি বাজারে তার থেকেও অনেক কম। কৃষি অধিদপ্তর মনে করছে, এই আলু যদি আরও ১০-১৫ দিন আগে তোলা হতো তাহলে কৃষকরা দাম মোটামুটি ভালো পেতেন। তবে সামনে দাম কিছুটা বাড়লে চাষিদের লোকসানে পড়তে হবে না। চাষিদের যেকোনো পরামর্শের জন্য কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর