বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বেঁধে দেয়া বেতন কাঠামো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। একইসঙ্গে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে এক বৈঠকের পর বিএবি’র চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এ সময় তিনি বলেন, মার্চের মধ্যে এন্ট্রি লেভেল ব্যাংক কর্মকর্তাদের গাইডলাইন মেনে বেতন-ভাতা দেয়া কঠিন হবে। আমরা গভর্নরকে সময় বাড়ানোর এবং পুরো বিষয়টি আরেকবার বিবেচনা করার অনুরোধ করেছি। আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, মার্চ মাস থেকেই সিদ্ধান্ত মানা ব্যাংকের জন্য কঠিন। এতে ব্যাংকারদের আর্থসামাজিক অবস্থা, ব্যাংকের ভারসাম্য সব বিষয় বিবেচনা করে বাস্তবায়ন করতে চাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও আমরা এ আবেদন জানিয়েছি।
ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য চমৎকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখনই এ সিদ্ধান্ত মানা হলে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নির্দেশনা কার্যকরে বাড়তি সময়ের দাবি ভেবে দেখা হবে। তবে সার্কুলারের বিষয়ে যেসব অস্পষ্টতা ছিল উভয়পক্ষের আলোচনায় তা পরিষ্কার হয়েছে।
এর আগে গত ২০শে জানুয়ারি শিক্ষানবিশকাল শেষ হওয়ার পর বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন বেতন ৩৯ হাজার টাকা বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী মার্চ থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর করতে হবে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, ব্যাংকের বেঁধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলে অথবা অদক্ষতার অজুহাতে কোনও ব্যাংকারকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। এছাড়া শিক্ষানবিশকালে ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারদের (জেনারেল ও ক্যাশ) সর্বনিম্ন বেতন হবে ২৮ হাজার টাকা হবে বলেও জানানো হয়।
তবে, এই নির্দেশনা কার্যকর করতে গিয়ে ব্যাংকগুলো চাপে পড়তে হবে বলে ব্যাংক মালিকরা মনে করেন। তাদের এই উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরতে বুধবার গভর্নর ফজলে কবিরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছাড়াও কয়েকজন এমডি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, করোনার কারণে ঋণ পরিশোধে ছাড় উঠে যাওয়ার পর ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাবে। এ নিয়ে তারা যখন দুশ্চিন্তায়, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক নানাভাবে আন্তর্জাতিক চর্চাবহির্ভূত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। এসব বিষয়ে তারা উদ্বেগও প্রকাশ করেন।