× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম জাতীয় অসংক্রামক রোগ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা: /দেশে প্রতি ১০ জনের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু অসংক্রামক রোগে

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার
(২ বছর আগে) জানুয়ারি ২৬, ২০২২, বুধবার, ৬:০৫ অপরাহ্ন

দেশে অসংক্রামক রোগের কারণে অপরিণত মৃত্যু বাড়ছে। যত মৃত্যু হয় তার ১০ জনে মধ্যে ৭ জনই অসংক্রামক ব্যাধিতে মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারসহ আরোও কয়েকটি রোগে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ মারা যায়। এ সব রোগে ৩০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে বেশি মৃত্যু হয় । এ মৃত্যু এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য বড় বাধা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

আজ বুধবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘১ম ন্যাশনাল এনসিডিস কনফারেন্স-২০২২ বাংলাদেশ’ এর প্রথম দিনের সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব বলেন। দেশে প্রথম বারের মতো শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় অসংক্রামক রোগ বিষয়ক ‘১ম ন্যাশনাল এনসিডিস কনফারেন্স-২০২২ বাংলাদেশ' সম্মেলন। চলবে আগামী ২৮শে জানুয়ারি পর্যন্ত। নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), বাংলাদেশ নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ ফোরম (বিএনসিডিএফ), বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল রির্সাচ প্লাটফর্ম এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরম, আইসিডিডিআরাবি, ব্রাক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পপুলার মেডিকেল কলেজসহ ৩০টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে এমন তিনজনের একজন কিডনি রোগে ভুগছেন।
তা তারা জানে না। দেশে ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জনই জানে না তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের অর্ধেকের বেশী জানেন না উচ্চ রক্তচাপ তাদের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। ১০০ জনের মধ্যে ৭৭ জন ওষুধ খাচ্ছে কিন্তু তাদের উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে নেই। একই অবস্থা ডায়াবেটিকসের ক্ষেত্রেও।

প্রথম জাতীয় অসংক্রামক রোগ সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক ডা. শামীম হায়দার তালুকদার বলেন, ৩৫ বছরের উপরে ৫০ শতাংশ মানুষের উচ্চ রক্তচাপ আছে। আমাদের দেশে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার সহ কয়েকটি রোগে ৭০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। যারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত তাদের চিকিৎসা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রতিরোধের উপর জোর দিতে হবে। এ প্রতিরোধের জন্য আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। দেশে অসংক্রামক ব্যাধি সংক্রান্ত যেসকল সভা- সেমিনার হয় সেগুলোতে অসংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর দাবি করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অর্গানিইজিং কমিটির সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি ডা. আলিয়া নাহিদ বলেন, বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের যদি খুঁজে দেখা হয় কতজনের উচ্চ রক্তচাপ আছে, দেখা যাবে ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জন জানে না তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। মানুষ যখন ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়ে সেখান থেকে প্রাথমিক ভাবে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস লক্ষণ থাকার কথা শুনতে পারেন বা পরীক্ষা করে দেখেন, তখন থেকেই ওষুধ খাওয়া শুরু করে কিন্তু চিকিৎসকের কাছে যায় না। এ কারণে দেশে অসংক্রামক ব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত সবার মধ্যেই জ্ঞানের অভাব রয়েছে। সবাই মনে করে অসুখটা ধরা পড়ার পরে, অসুখটা হয়েছে। কিন্তু অসুখটা ধরা পড়ছে শেষ সময়। তারপর থেকে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে হবে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ওষুধ খেতে হবে। অর্থাৎ আমাদের অসুখটা হওয়ার আগেই ডায়াগনোসিস করতে হবে।

তিনি বলেন, ৩০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতিবছর একবার করে অন্তত  স্ক্রিনিং করতে হবে। স্ক্রিনিং এর মধ্যে শরীরের ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস সহ রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা করতে পারলে ভালো। শরীরের মেদ, লবণ ও চিনি বেশি পরিমাণে খাওয়া, বসে বসে কাজ করা, মানসিক চাপে ভোগেন, খেলাধুলা করেন না, প্রতিদিন নিয়মিত ৩০ মিনিটের কম হাঁটাচলা করে এমন ব্যক্তিদের প্রতিবছর একবার করে স্ক্রিনিং করার পরামর্শ দেন তিনি। এইসব উপসর্গ যাদের মধ্যে আছে তারা অসংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে থাকেন। অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ডিমেনশিয়া, হাটের নানা রকম অসুখ, লিভারের সমস্যা এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেন।

আলেয়া নাহিদ বলেন, আমরা দেখেছি গবেষণার মাধ্যমে সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। মানুষ শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ না করলে চিকিৎসকের কাছে যায় না। এর কারণেই অসংক্রামক ব্যাধি মানুষের উপর ভর করছে। সাধারণ মানুষের উচিত খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা। যেমন: লবণ ও চিনি বেশি না খাওয়া ও তেল চর্বি জাতীয় খাবার ও তামাক পণ্য পরিহার করা। প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকের চারপাশে যারা আছেন তারা কি সুস্থ আছেন কিনা কোনো অসুস্থতায় ভুগছেন তাদেরকে চিকিৎসকের কাছে পাঠানো বা সঠিক পরামর্শ দেয়া আপনার কর্তব্য। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একটা প্রতিষ্ঠান প্রধান যদি ইচ্ছে করে তাহলে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী কর্মকর্তাদের পরামর্শের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি স্ক্রিনিং কার্যক্রমের প্রতি জোর দিলে প্রাথমিকভাবে অনেকেই নিজের শারীরিক অসুস্থতা সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতে সফলতা আছে, সীমাবদ্ধতাও আছে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরধে আমাদের সঠিক পরিকল্পনা করে, সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আরো বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি।

প্রথম দিনে সকালের উদ্বোধন সেশনে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. হুমায়ুন কবির, পিওর আর্থের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, সাউথ ইস্ট এশিয়া রিজিওনাল এনসিডি অ্যালায়েন্সের চেয়ারপার্সন ডা. মনিকা আরোরা, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটেস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট (নির্বাচিত) অধ্যাপক আখতার হোসাইন, হেলথ ইকনোমিক ইউনিটের মহাপরিচালক ডা. শাহাদাত হোসেন মাহমুদ। এ সেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাবেক সেক্রেটারি ডা. সারওয়ার আলী।
বৈজ্ঞানিক সেশনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন এই সেশনের চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. জামান, আইসিডিডিআরবি নির্বাহী পরিচালক ডা. শামস এল আরেফিন, ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. অরুন জোস, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রুবানা রাকিব, অর্গানিইজিং কমিটির সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি ডা. আলিয়া নাহিদ, ডা. আফরিন ইকবাল, ডা. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
পাঠকের মতামত
**মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।
Nam Nai
২৬ জানুয়ারি ২০২২, বুধবার, ৯:২৯

We have to see the photos of two great thieves of Bangladesh in every national events.

অন্যান্য খবর