সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের বেশিরভাগ ঘরেই তালা ঝুলছে, থাকছেন না বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তবে বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা এসব ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে বিধি অনুযায়ী নতুনদের বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বিয়ানীবাজারে ১০৪টি আশ্রয়ণ শ্রকল্পের ঘর উপকারভোগীদের মাঝে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আরও ৬০টি ঘর ৩য় ধাপে নির্মাণের জন্য অনুমতি পাওয়া গেছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর।
সরজমিন দেখা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক ঘরে লোকজন নেই। তারা ঘরে তালা দিয়ে অন্যত্র থাকছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা জানান, তালাবদ্ধ করেবেশির ভাগ লোকজনই অন্যত্র চলে গেছেন। তাদের কেউ থাকেন নিজ বাড়িতেই, কেউ থাকেন অন্যত্র। এজন্যই বেশিরভাগ ঘর ফাঁকা পড়ে আছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, আমার কাছে অনেকে এসে এসব ঘরে না থাকার ব্যাখা দিয়েছেন। এসব ঘরে থাকলে নাকি মেয়ে বিয়ে দেয়া যাবে না, সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়। কেউ আবার পরিবারে লোক বেশি বলেও থাকতে চাইছেন না। তিনি বলেন, বসবাসকারী অনেকে ঘর ছোট বলেও অভিযোগ করেছেন। মুল্লাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান জানান, প্রথমদিকে প্রায় সবাই এসব ঘরে ওঠেন। পরবর্তীতে হয়তো অনেকে চলে যেতে পারেন। আমার কাছে বসবাসকারীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নারী বলেন, ‘যারা ঘর পেয়েও সেখানে থাকছেন না, তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘরবাড়ি রয়েছে। তাই তারা এসব ঘরে থাকছেন না, শুধু দখলে রেখেছেন। এই এলাকাতেই ভূমিহীন অনেকে রয়েছেন, তারা ঘর পাননি।’ আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে বসবাসকারী একজন বলেন, ‘এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক বছর ধরে থাকতেছি। এই শীতের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কেউই কারও কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। শীতের মধ্যে খুব কষ্টে থাকতে হচ্ছে।’ বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদ্যুৎসহ সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া ঘরের উপকারভোগীদের বিষয়ে তথ্য নেয়া হয়েছে। যারা ঘরগুলোতে থাকতে চান না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেয়া হবে।’