অসংক্রামক ব্যাধি দেশের জন্য ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উদ্বেগের কারণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ৬৭ শতাংশ মৃত্যুর জন্য এটি দায়ী। বাংলাদেশের ২০ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপ, ১০ শতাংশ ডায়বেটিস ও ২০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে ভোগে। প্রতি বছর ৫০ হাজার যোগ হয়।
আজ বুধবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘১ম ন্যাশনাল এনসিডিস কনফারেন্স-২০২২ বাংলাদেশ’ এর প্রথম দিনের সম্মেলন অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), বাংলাদেশ নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ ফোরম (বিএনসিডিএফ), বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল রির্সাচ প্লাটফর্ম এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরম, আইসিডিডিআরাবি, ব্র্যাক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পপুলার মেডিকেল কলেজসহ ৩০টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জীবন যাত্রার পরিবর্তন, খাদ্যাভাসে পরিবর্তন, ওবিসিটি, তামাকের ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, অপর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম, ওষুধের অপব্যবহারের কারণে এনসিডি বাড়ছে। এনসিডি প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। রেগুলার চেকআপ ও আর্লি ডিটেকশন এনসিডি কন্ট্রোলে গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রিটমেন্ট ফ্যাসিলিটি বাড়ানো ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন। সরকার এনসিডি প্রতিরোধে সেক্টর ভিত্তিক প্রোগ্রাম নিয়েছে। দেশের আট বিভাগে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। দেশের সব জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ও আইসিইড বেড স্থাপন করা হচ্ছে। উপজেলা হজাসপাতালসহ দেশের সব হাসপাতালে এনসিডি কর্নার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নন কমিউনিকেবল ডিজিজ ফোরাম ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামকে এ কনফারেন্স আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। হাসপাতালগুলো কোভিড রোগী দিয়ে ভর্তি হওয়ায় এনসিডি রোগীরা সেবা বঞ্চিত হয়েছে। দেরিতে সেবা নেয়ায় মৃত্যু বেড়েছে। এখন দেশে কোভিড পজিটিভিটি রেট ৩২ শতাংশ, দিনে ১৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক পরতে, জনসমাগম এড়ানো ও ভ্যাকসিন নেয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্্রস আধানম অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, অসংক্রামক ব্যাধির কারণে বাংলাদেশসহ মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। প্রাইমারি হেলথ কেয়ার পর্যায়ে এই রোগগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিতের আহ্বান জানান তিনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা বলেন, তামাকের ব্যবহার, আনহেলদি লাইফ স্টাইলের কারণে এনসিডি বাড়ছে। এনসিডি কন্ট্রোল ও প্রিভেনশনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ডব্লিউএইচও। যারা এনসিডিতে ভুগছেন তাদের ন্যায়সঙ্গত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে প্রাইমারী হেলথ কেয়ার পর্যায়েও।