সবকিছু ঠিক থাকলে আজ সংসদে পাস হবে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন গঠন আইন। সকাল ১১টায় সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার পর দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী আইন প্রণয়ন কার্যাবলীর শুরুতেই আইনটি পাসের কার্যক্রম রয়েছে। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আইনটি পাস হতে যাচ্ছে। এর আগে গতকাল নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইনটি পাসের সুপারিশ করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। দুইদিন বিরতির পর গতকাল বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত সংখ্যক উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার। নিয়ম অনুযায়ী এখন আইনমন্ত্রী যেকোনো দিন বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করবেন। এর ওপর সংসদ সদস্যরা জনমত যাচাই- বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনীর প্রস্তাব তুলবেন।
তখন বিলটি নিয়ে সংসদে আলোচনা ও পাস হবে। সূত্র মতে, সংসদ চাইলে সংসদীয় কমিটির সুপারিশসহ কিংবা সংসদে যে রকম স্থির করা হবে সেভাবে খসড়া আইনটি পাস হবে। সাধারণত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ সংসদে গ্রহণ করা হয়। গত রোববার আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিলের দু’টি ধারায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সংসদে উত্থাপিত বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনারদের (ইসি) যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও ইসি হতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও পেশায়’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। অর্থাৎ সিইসি ও ইসি পদে সার্চ কমিটি কাউকে সুপারিশের ক্ষেত্রে এমন কাউকে করতে হবে, যার কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত পদে বা পেশায় অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা আছে। আর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে বিলের ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে দুই বছরের কারাদণ্ড উঠিয়ে দিয়ে শুধু কারাদণ্ডের সুপারিশ করেছে কমিটি। অর্থাৎ নৈতিক স্খলন ফৌজদারি অপরাধে যেকোনো মেয়াদের সাজা হলেই তা সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ওই বিলের প্রতিবেদন অধিবেশনে ছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সংশ্লিষ্ট কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করেন।