দেশে একদিনের ব্যবধানে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যু সামান্য কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ২৭৩ জন। নতুন শনাক্তের ৫৩ শতাংশই ঢাকা মহানগরের বাসিন্দা। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৫২৭ জন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৩৩ জন। সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৫২৪ জন। দৈনিক শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
যা আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫২ জন এবং এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ৬০ হাজার ৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়, দেশে ৮৬০টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ২৭৫টি নমুনা সংগ্রহ এবং ৪৯ হাজার ৭৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২২ লাখ ৬১ হাজার ২৫২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১৩ পুরুষ এবং ৪ জন নারী। দেশে মোট পুরুষ মারা গেছেন ১৮ হাজার ৭৫ জন এবং নারী ১০ হাজার ১৯৮ জন। তাদের মধ্যে বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯১ থেকে ১০০ বছরের ৩ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের ১ জন রয়েছেন। মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ঢাকায় ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, খুলনা বিভাগে ১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন রয়েছেন। মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১২ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৫ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। নতুন শনাক্তের মধ্যে ঢাকা মহানগরের রয়েছেন ৮ হাজার ২৫৯ জন। যা একদিনে মোট শনাক্তের ৫৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৯ হাজার ৪৫৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৮২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ হাজার ৪৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ৮৮ জন, রংপুর বিভাগে ৩৫৯ জন, খুলনা বিভাগে ৮৮০ জন, বরিশাল বিভাগে ৩২১ জন এবং সিলেট বিভাগে ৬৯৭ জন শনাক্ত হয়েছেন।
ওমিক্রন প্রতিরোধের ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত: করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটি প্রতিরোধের ইতিমধ্যে ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। বুধবার দুপুরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র এই তথ্য জানিয়ে বলেন, ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণেই ক্রমাগত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সংক্রমণ প্রতিরোধে ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। এরইমধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ইতিমধ্যে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। ক্লিনিক্যাল গাইডলাইনটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। নতুন নতুন তথ্য দিয়েই গাইডলাইন সাজানো হয়েছে। তিনি বলেন, ওমিক্রনের যে উপসর্গ আছে সেই উপসর্গগুলো এতে (ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন) যোগ করা হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো উপসর্গ রয়েছে কিনা সেটি খুঁজে দেখা হচ্ছে। যাই হোক না কেন, রোগ নিয়ন্ত্রণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। সঠিক নিয়মে মাস্ক পরা সাবান-পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করা। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে এই অতিমারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ।