দিনের প্রতিমুহূর্তে হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর মাওনা চৌরাস্তার ফুটপাথ ছাড়িয়ে এখন সড়কই বেদখল হয়ে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর দু’পাশেই প্রতিদিন বসে হাজারো দোকান পাট। প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে এসব দোকান থেকে দিনে লাখ টাকার বাণিজ্য হয়। আর যানজট ও হাঁটার জায়গা না থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার বুক বেয়ে চলে গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। এছাড়াও এখানে সংযুক্ত হয়েছে মাওনা কালিয়াকৈর সড়ক ও মাওনা বরমী সড়ক। শিল্প এলাকায় সমৃদ্ধ ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র এই মাওনা চৌরাস্তা নিত্যপ্রয়োজনে প্রতিদিন লাখো মানুষের আনাগোনা থাকে। এ সুযোগে দীর্ঘদিন আগেই ফুটপাথগুলো ভাসমান ব্যবসায়ীদের কারণে অবৈধ দখলে চলে গেছে।
আর এখন ফুটপাথ ছাড়িয়ে সড়কগুলো অবৈধ দখল হয়ে যাচ্ছে।
মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সড়ক ঘিরে গড়ে উঠেছে শত দোকানপাট। এছাড়াও দিনের অধিকাংশ সময়েই মহাসড়কের লেন দখল করে বসে বিভিন্ন ভাসমান ব্যবসায়ীরা। ফলে অধিকাংশ সময় যানজট লেগেই থাকে। মাওনা চৌরাস্তা থেকে কালিয়াকৈর সড়কের প্রায় ৫০০ গজ এলাকায় সড়কের দু’লেন সমানভাবে দখল হয়ে গেছে। শ্রীপুর ও ঢাকা সড়কেরও একই অবস্থা। এছাড়াও সড়কের উপরেই গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন মার্কেট কর্তৃপক্ষ ফুটপাথ ও সড়কে এসব অবৈধ দোকান তৈরিতে সহায়তা করে থাকে। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করে তারা। এভাবে প্রতিদিন হাজারো দোকান থেকে কয়েক লাখ টাকা আদায় হয়। এসব টাকা আদায় করে নেন হাইওয়ে পুলিশ ।
এই যানজটের কবলে পড়ে শিল্পকারখানার পণ্যবাহী গাড়ি, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, হাসপাতালের অসুস্থ রোগীদের চরম ভোগান্তি হয়। মাওনা চৌরাস্তার ব্যবসায়ী ফিরুজ আহমেদ বলেন, মাওনা চৌরাস্তায় হাজারো সমস্যা। এখন অন্যতম সমস্যা হচ্ছে যানজট। কষ্টের কথা হলো ফুটপাথের পর এখন সড়কগুলোও দখল হয়ে যাচ্ছে। হাঁটতে গেলে নারী ও শিশুদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফুটপাথ থাকায় হাঁটতে গেলে ভিড় তৈরি হয়। সেখানে প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের শিকার হন অনেক নারী।
স্থানীয় নারী অধিকার কর্মী সাহিদা আক্তার স্বর্ণা বলেন, মাওনা চৌরাস্তায় এখন চলাচল করাটা খুবই কষ্টকর। যে যেভাবে পারছে দখল করে ব্যবসা করছে। ফুটপাথ নেই, সড়কও দখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ সবাই নীরব। আমাদের দাবি যেভাবেই হোক ফুটপাথ ও রাস্তা অবৈধ দখলের কবল থেকে উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেনের দাবি, পুলিশ কারো কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নেয় না। তবে মাঝে-মধ্যে উচ্ছেদ করলেও ফের তারা আবার বসে পড়ে। এদের জন্যই মূলত যানজটমুক্ত করা যাচ্ছে না। শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। খুব শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে।