ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় পটাশ সার বস্তাপ্রতি ৩৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছে খুচরা সার ডিলাররা। বোরো মৌসুম শুরুর মুহূর্তে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। অনেক কৃষক চড়া দামে পটাশ সার কিনতে না পেরে বোরো ক্ষেতে শুধু ডিএপি সার প্রয়োগ করছেন। কৃষি বিভাগ চড়া দামে সার বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেছে।
উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। বোরো মৌসুমের শুরুতেই ১৫ দিন ধরে পটাশ সারের সংকট চলছে এ উপজেলায়। সার সংকটকে পুঁজি করে এক শ্রেণির খুচরা সার ডিলার ৭৫০ টাকা বস্তা পটাশ সার ১১০০ টাকায় বিক্রি করছে। উপজেলার নাওগাঁও, রাঙ্গামাটিয়া, এনায়েতপুর, কালাদহ ও বাকতায় পটাশ সার সংকট বেশি।
এসব ইউনিয়নে বোরোর পাশাপাশি লেবু ক্ষেতে পটাশ সার প্রয়োগ করে থাকেন কৃষকরা।
এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক রহিম জানান, এক সপ্তাহ আগে বোরো ক্ষেত তৈরির আগে সার কিনতে এনায়েতপুর বাজারের খুচরা সার ডিলারের দোকানে গিয়েছিলাম। প্রথমে বলেছে পটাশ সার নাই। পরে বলেছে দাম একটু বেশি। বস্তাপ্রতি ৩৫০ টাকা বেশি দিয়ে আমি সার কিনিনি। শুধু কালো সার (ডিএপি) দিয়ে বোরো রোপণ করছি। সোয়াইতপুর বাজার তালুকদার এন্টারপ্রাইজ নামক খুচরা সার ডিলারের দোকান থেকে টিএসপি এক বস্তা সার ১৭শ’ টাকা, পটাশ ৫ কেজি ১১০ টাকা দরে কিনে ভ্যান দিয়ে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় কথা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রুহুল আমীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘লাল’ (পটাশ) সার বাজারে নাই তাই দাম বেশি নিয়েছে। টিএসপি প্রতি বস্তা সারের দাম কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাচাই করমু কেমনে দোকান তো একটা। সার কেনার পর দোকান থেকে কোনো ভাউচার দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাই তিনি বলেন, ‘দোকানদার (খুচরা সার ডিলার) কোনো ভাউচার দেন না।’ খুচরা সার ডিলার খোরশেদ আলম জানান, এক মাস যাবৎ পটাশ সারের সংকট চলছে তাই দাম বেশি। আমরা বিসিআইসির সার ডিলারের কাছে সার চাইলে আজ নয় কাল করে সময় পার করছেন। কৈয়ার চালা গ্রামের কৃষক হালিম জানান, পটাশ সারের ১১০০ টাকা বস্তা দরে কিনে ক্ষেতে দিয়েছি। কোনো ভাউচার দোকান থেকে আমাদের দেয়া হয় না। উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার দোলোয়ার হোসেন বলেন, সার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তারা অভিযোগ পেয়েছেন। মাঠ তদারকি করে অনেকের লাইসেন্স নিয়ে আসা হয়েছিল মুচলেকা দিয়ে আবার লাইসেন্স নিয়ে গেছেন। পটাশ সারের সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সার আসতে একটু সময় লাগে। আমরা ৯৪ টন সার আজ পেয়েছি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দায়ী খুচরা সার ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।