খুলনার সরকারি বিএল কলেজছাত্র মো. রুবেল হত্যার দায়ে আল আমিন বিশ্বাস নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানসহ অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অপরদিকে এ মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিল। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ। খানজাহান আলী থানার জাব্দিপুর এলাকার মোমিন বিশ্বাসের ছেলে আল আমিন। আইনজীবী জানান, তেলীগাতী মধ্যপাড়া এলাকার চান মোল্লার ছেলে ভিকটিম মো. রুবেল।
সে বিএল কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বড় ভাই বারেকের স্ত্রীর ছোট বোন সম্পা ফুলবাড়িগেট টিচার্স ট্রেনিং স্কুলে পড়াশুনা করতো। সম্পার স্কুলে যাওয়া আসার পথে আসামি আব্দুল্লাহসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি জানার জন্য রুবেল আসামি আব্দুল্লার কাছে যায়। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডাসহ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তাকে হত্যার পরিকল্পনা আব্দুল্লার মাথায় আসে। পরিকল্পনার ৩ মাসের মধ্যে রুবেলকে খুন করা হয়।
২০১৪ সালের ২১শে জুন বিকালে প্রতিবেশী রাজীবকে সঙ্গে নিয়ে ভিকটিম ফুলবাড়িগেট আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যায়। রাত সোয়া ৮টার দিকে রুবেল কুয়েটের নবম ব্যাচের সমাপনী সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যায়। সেখানে আসামি আব্দুল্লাহ রুবেলকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া দেয়। কিছু বুঝতে না পেরে রুবেল কুয়েটের অডিটোরিয়ামে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং মেজভাই বারেককে ফোন দেয়। আব্দুল্লাহ ও তার সহযোগীরা তাকে ঘিরে রেখে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে আব্দুল্লাহ ধারলো ছুরি বের করে রুবেলের পেটে ঢুকিয়ে দেয় ও অপর আসামি পলাশ ছুরি দিয়ে বাম হাতে আঘাত করে। এলাকাবাসী ও বারেক উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন নিহতের পিতা আবু বক্কার সিদ্দিক ৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন।